মণিপুর কংগ্রেসে বিদ্রোহ, নতুন সভাপতি হাওকিপ

অসম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচলের পর মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সামিল মণিপুরের বিধায়করাও। মণিপুরে কংগ্রেস সরকারের ১২ জন মন্ত্রীর মধ্যে ১১ জনকেই সরানোর দাবিতে সরব বিধায়কদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২১
Share:

অসম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচলের পর মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সামিল মণিপুরের বিধায়করাও।

Advertisement

মণিপুরে কংগ্রেস সরকারের ১২ জন মন্ত্রীর মধ্যে ১১ জনকেই সরানোর দাবিতে সরব বিধায়কদের একাংশ। এ দিকে মন্ত্রিসভার সদস্যরা একজোট হয়ে ঘোষণা করেছেন— মন্ত্রিসভা থেকে এক জনকেও সরালে সব মন্ত্রী একসঙ্গে ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেস ছাড়বেন। এমন পরিস্থিতিতে মণিপুর কংগ্রেসের নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন টি এন হাওকিপ।

গত তিন বছরে উত্তর-পূর্বে তিনটি রাজ্যে কংগ্রেস শাসিত সরকারে বিদ্রোহ মাথাচাড়া দেয়। নাগাল্যান্ডে এনপিএফ-বিজেপি ড্যান জোটেও বিদ্রোহ দেখা দেয়। অসমে কংগ্রেসের বিদ্রোহী গোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব বদলে সফল না হয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। মেঘালয়ে সফল ভাবে বিদ্রোহ দমন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। অরুণাচলে সাংবিধানিক সঙ্কট এবং রাষ্ট্রপতি শাসনের মধ্যে দিয়ে সরকার কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়ে এনপিপি-বিজেপির হাতে চলে গিয়েছে। নাগাল্যান্ডে মুখ্যমন্ত্রী বদলের জন্যে বিদ্রোহ হলেও, আস্থাভোটে রাজ্যের সব বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে ভোট দেওয়া এখন সেখানে বিরোধীহীন বিধানসভা চলছে।

Advertisement

এত দিন শান্ত ছিল মণিপুর। কিন্তু কিছু দিন আগে মণিপুরের কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ নেতৃত্ব বদলের দাবি নিয়ে হাইকম্যান্ডের দ্বারস্থ হন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে মন্ত্রিসভা থেকে অদক্ষ, দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্যদের সরিয়ে নতুনদের জায়গা দিতে হবে। সনিয়া গাঁধী এ নিয়ে আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহকে দিল্লিতে তলব করেন। আলোচনার পরে কয়েক জন মন্ত্রীকে বদল করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো বাদ পড়তে চলা মন্ত্রী ও নতুন অন্তর্ভুক্ত হতে পারা মন্ত্রীর তালিকা চূড়ান্ত করে শুক্রবার ইবোবির দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু মন্ত্রিসভার সদস্যরা ইবোবিকে জরুরি বৈঠকে বসিয়ে জানিয়ে দেন, তাঁদের কাউকে বাদ দেওয়া চলবে না। যাকেই বাদ দেওয়া হোক, মনে হবে তিনি অদক্ষ ও দুর্নীতিগ্রস্থ। তার প্রভাব পরের বিধানসভা নির্বাচনে পড়বে। মন্ত্রিসভার ১২ জন সদস্য একজোট হয়ে ইবোবিকে জানিয়ে দিয়েছেন, এক জন বাদ পড়লেই সকলে পদত্যাগ করবেন। কিন্তু বিরোধী গোষ্ঠী গত কাল জোর দিয়ে জানিয়েছে, মন্ত্রিসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বাদে সকলকেই সরিয়ে দিতে হবে। এর মধ্যেই, বিরোধীদের দাবি মেনে উপ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গাইখংবামকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে টি এন হাওকিপকে নতুন সভাপতি করেন সনিয়া। গাইখংবামকে সরানোর প্রতিবাদে সহ-সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন হিল এরিয়া কমিটির চেয়ারম্যান সি আমো।

গত কাল সকালে হাওকিপ দায়িত্ব নেন। তারপরেই বিবাদ সামলাতে দিল্লি রওনা হন তিনি। বিদায়ী সভাপতি গাইখংবাম অবশ্য দাবি করেন, দলে তেমন বড় বিভাজন ঘটেনি। যা হচ্ছে তা দলের ভিতরের ব্যাপার। কংগ্রেস গণতান্ত্রিক দল। সেখানে সকলেই নিজেদের অভিযোগ ও দাবি জানাতে পারেন। কিন্তু হাইকম্যান্ডের নির্দেশ সকলেই মেনে চলবেন। সমস্যাও কেটে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement