কুন্দাপুরের কলেজে কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সামনে হিজাব পরে প্রতিবাদ পড়ুয়াদের। শনিবার। ছবি পিটিআই।
রাজ্যে চলতি হিজাব-বিতর্কে ইতি টানতে সরকারি কলেজে পোশাক নির্দেশিকা জারি করল কর্নাটক সরকার।
কর্নাটক শিক্ষা আইন ১৯৮৩-এর কথা উল্লেখ করে ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া পোশাক পরেই পড়ুয়াদের কলেজে আসতে হবে। তবে যে-সব কলেজে কোনও পোশাকবিধি নেই, সেখানে এমন পোশাক পরা যাবে না যাতে শিক্ষাঙ্গনের ভারসাম্য, ঐক্য এবং শৃঙ্খলা নষ্ট হয়।
রাজ্যের শিক্ষা সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সরকারি কলেজগুলি নিজস্ব পোশাকবিধি চালু করতে পারে। কয়েকটি সরকারি কলেজে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরে আসার অনুমতি থাকলেও হিজাব পরে ক্লাস করা যাবে কি না সে বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট করে বলা নেই।
শিক্ষাঙ্গনে হিজাব পরে আসা নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কে রাজনৈতিক রং লেগেছে ইতিমধ্যেই। আগেই এ প্রসঙ্গে শাসক দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন কর্নাটকের বিরোধী নেতা সিদ্দারামাইয়া। আজ, বাগ্দেবীর আরাধনার দিনে মুখ খুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। টুইট করে রাহুল বলেন, ‘শিক্ষার পথে হিজাবকে বাধা হিসাবে তুলে ধরে আমরা মেয়েদের ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নিচ্ছি। মা সরস্বতী কিন্তু সকলকেই বিদ্যা দান করেন। তিনি বিভেদ করেন না।’
রাহুলের টুইটের পরে বিজেপি শাসিত কর্নাটকের মন্ত্রী ভি সুনীল কুমার বলেন, ‘‘তিন তালাক প্রথা বাতিল করে আমাদের সরকার মুসলিম মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারি ক্যাম্পাসের ভিতরে সকলের পোশাক-বিধি মেনে চলা উচিত। এটাই শুধু বলতে চাই।’’
ঘটনার সূত্রপাত কয়েক সপ্তাহ আগে। রাজ্যের উদুপি জেলায় একটি সরকারি কলেজে ছয় ছাত্রীকে হিজাব পরে ক্লাস করতে বাধা দেওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়েছিল। সেই ঘটনায় আদালতের দ্বারস্থ হন এক ছাত্রী। পরে বিতর্কের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে আরও কয়েকটি কলেজে। গত বৃহস্পতিবার ওই জেলার সৈকত-শহর কুন্দাপুরের একটি কলেজে হিজাব পরে আসা কয়েক জন জন ছাত্রীকে ক্লাস করতে বাধা দেওয়া হয়। ছয় ঘণ্টা ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা। শুক্রবারও একই ভাবে তাঁদের ক্লাসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আজ ওই ঘটনার প্রতিবাদে কুন্দাপুরের ভান্ডারকর আর্টস এবং সায়েন্স ডিগ্রি কলেজের গেটে ৪০ জন ছাত্রী হিজাব পরে প্রতিবাদ জানান। হিজাব না খোলায় তাঁদের ক্লাসে ঢুকতে দেননি রক্ষীরা। অন্য দিকে হিজাবের পাল্টা হিসাবে অন্তত শ’খানেক ছাত্র গেরুয়া শাল পরে বিক্ষোভ দেখান। এই প্রসঙ্গে ভান্ডারকর কলেজের অধ্যক্ষা
নারায়ণ শেঠি বলেছেন, ‘‘আমি সরকারি কর্মচারী। সরকারের নির্দেশিকা মেনে চলতেই হবে। কলেজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে চাই। শুনেছি কিছু পড়ুয়া গেরুয়া শাল গায়ে দিয়ে ক্লাসে ঢুকতে চেয়েছিল। এ ভাবে ধর্মের নামে সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হলে আমাকেই দায়ী করা হবে।’’
সংবাদ সংস্থা