সেন্থিল বালাজি। ছবি: সংগৃহীত।
বিরোধী দলগুলির পটনায় বৈঠকের সপ্তাহ খানেক বাকি। তার আগে ইডি-র হাতে তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকারের মন্ত্রীর গ্রেফতারি বিরোধী দলগুলির ঐক্যে নতুন রসায়নের কাজ করল। কংগ্রেস থেকে তৃণমূল, আরজেডি থেকে ন্যাশনাল কনফারেন্স— প্রায় সব বিরোধী দলই বুধবার একসুরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানোর অভিযোগ তুলেছে।
বিরোধী শিবিরের দাবি, বিরোধীরা একজোট হওয়ার চেষ্টা করতেই মোদী সরকার কথা বিজেপি ভয় পেয়ে ফের ইডি-সিবিআইকে মাঠে নামিয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের বক্তব্য, বিরোধী দলগুলি এতে ভয় পাবে না। তৃণমূল এতদিন বিরোধী শিবিরের মধ্যেও শ্রেণি বিভাজন করছিল। এক দিকে কংগ্রেস এবং ডিএমকে, এনসিপি-র মতো শরিক দল। অন্য দিকেস আম আদমি পার্টি, সমাজবাদী পার্টির মতো দল, যারা তৃণমূলের সঙ্গে বেশি স্বচ্ছন্দ। ডিএমকে-র মন্ত্রীর গ্রেফতারি সেই শ্রেণি বিভাজনও ঘুচিয়ে দিয়েছে। তৃণমূল নিজেদেরও ‘সিবিআই-ইডির রাজনৈতিক অপব্যবহারের শিকার’ বলে দাবি করে জোর গলায় ডিএমকে-র পাশে থেকেছে।
নিয়োগে দুর্নীতি ও আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে মঙ্গলবারই ইডি তামিলনাড়ুর স্ট্যালিন সরকারের মন্ত্রী ভি সেন্থিল বালাজির বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল। প্রায় ১৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে বুধবার ভোররাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সেন্থিল বুকের ব্যথায় কাঁদতে শুরু করলে, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাঁর করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাম করে দ্রুত বাইপাস সার্জারির পরামর্শ দিয়েছেন। আদালত তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের বক্তব্য, ‘‘২৩ জুন পটনার বৈঠককে সামনে রেখে বিরোধীরা এককাট্টা হতেই বিজেপি ভয় পেয়েছে। যবে থেকে বিহারে বিজেপি বিরোধী দলগুলির মহাজোট হয়েছে, তবে থেকেই এ রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এর পরে হয়তো আমার নামও বিহারের নিয়োগ দুর্নীতির চার্জশিটে দেখা যাবে।’’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল বলেছেন, ইডি-সিবিআইকে ‘বিজেপির সেনা’ নাম দেওয়া উচিত। তাঁরা দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে না। দুর্নীতিগ্রস্তেরা বিজেপিতে আশ্রয় নিচ্ছে। ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওমর আবদুল্লা থেকে এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলের বক্তব্য, তাঁরা ইডি-র পদক্ষেপে বিস্মিত নন। বিজেপি বিরোধিতাতেই এই খেসারত।
বিজেপি অবশ্য বলছে, সেন্থিল যখন এডিএমকে-সরকারের পরিবহণ মন্ত্রী ছিলেন, সেই সময় থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ। তখন ডিএমকে-র এম কে স্ট্যালিন নিজেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। এরই মধ্যে সিবিআইয়ের জন্য সাধারণ ভাবে রাজ্যে যে অনুমতি দেওয়া থাকে, তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে তামিলনাড়ু।