২০১২ সালে ‘সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে’ নরেন্দ্র মোদী-সহ ৬৩ জনকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছিল। প্রতীকী ছবি।
গুজরাত দাঙ্গা মামলায় নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দেওয়ার বিরোধিতা করে ফের সুপ্রিম কোর্টের সামনে জ়াকিয়া জ়াফরি। গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ডে নিহত হন জ়াকিয়ার স্বামী কংগ্রেস সাংসদ এহসান জ়াফরি। প্রায় কুড়ি বছর ধরে ন্যায়বিচার চেয়ে মামলা লড়ে আসছেন জ়াকিয়া।
গুজরাত দাঙ্গার তদন্তে গঠিত সিট ২০১২ সালে তার ক্লোজ়ার রিপোর্ট জমা দেয়। সেখানে ‘সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে’ নরেন্দ্র মোদী-সহ ৬৩ জনকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছিল। জ়াকিয়া তারই বিরোধিতা করছেন। এর আগে গুজরাত হাই কোর্ট তাঁর আবেদন খারিজ করেছে। বেশ কয়েক বার মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরে অবশেষে সু্প্রিম কোর্টে তাঁর আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে দু’সপ্তাহ আগে, বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি সি টি রবিকুমারের বেঞ্চে। অশীতিপর জ়াকিয়ার হয়ে সওয়াল করছেন আইনজীবী, তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কংগ্রেসের কপিল সিব্বল। তাঁদের দাবি, সিট বহু সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখেইনি।
আগের দিনের শুনানিতেই সিব্বল দাবি করেছিলেন, কোনও ‘উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে’ নিশানা করা এই আবেদনের উদ্দেশ্য নয়। প্রশ্নটা আইনশৃঙ্খলা এবং মানবাধিকারের। ‘‘পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে গণহত্যা ঘটেছে। তার উপযুক্ত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশ, বিদ্বেষমূলক প্রচারের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হোক।’’ দাবি করেছিলেন, ২৩ হাজার পাতার নথিপত্র, সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে, যা কেউ খুলে দেখেনি। ‘‘আদালতও যদি এ বিষয়ে মনোযোগী না হয়, মানুষ কার কাছে যাবে?’’ প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।
আজকের সওয়ালে সেই প্রসঙ্গকেই আরও এগিয়ে নিয়ে যান সিব্বল। আদালতকে বলেন, সংগৃহীত সাক্ষ্যপ্রমাণের বৃহদংশই সিট খুলে দেখেনি। বলা চলে তারা যথাযথ তদন্ত না করেই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে সিব্বল দাবি করেন, সিট বয়ান রেকর্ড করেনি, ফোন বাজেয়াপ্ত করেনি, কী ভাবে বোমা তৈরি হল খুঁজে দেখেনি— এ সব না করেই তারা ক্লোজ়ার রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। ১৯৪৭-এ দেশভাগ পরবর্তী হিংসায় তিনি নিজেও তাঁর দাদু-দিদাকে হারিয়েছিলেন, সিব্বল আজ বলেছেন আদালতে।