নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সেই অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক।
হাজারো বিতর্কের মধ্যে যে প্রশ্নের জবাব এত দিন পর্দার আড়ালেই রেখে দিতে অভ্যস্ত ছিল কেন্দ্র, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সেই অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে এ বার সরাসরি মুখ খুলল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তথ্যের অধিকার আইনে একটি প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ১৯৪৫ সালে তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই আচমকা এই ঘোষণায় শুরু হয়েছে বিতর্ক।
কলকাতার বাসিন্দা সায়ক সেনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘‘শাহনাওয়াজ কমিটি, বিচারপতি জি ডি খোসলা কমিশন ও বিচারপতি মনোজ মুখোপাধ্যায় কমিশনের রিপোর্টগুলি বিবেচনার পরে সরকার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, ১৯৪৫ সালে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল।’’ আরও জানানো হয়েছে, গুমনামি বাবা নেতাজি নন— মুখোপাধ্যায় কমিশনই সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল।
নেতাজির পরিবারের সদস্য ও দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে গোপন নেতাজি-নথি প্রকাশ করেছে মোদী সরকার। তার পরেও অবশ্য অন্তর্ধান রহস্যে পর্দা টানাই ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার মোদী সরকারের জবাব যেন সব কিছু ছাপিয়ে কয়েক যুগ ধরে চলা বিতর্কে জল ঢেলে দিতে চেয়েছে। আর বিতর্ক শুরু হতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘দেশের মানুষের সামনে যে সব তথ্য রাখা ছিল এবং বছর বছর ধরে সরকার যে অবস্থান নিয়েছে, তার ভিত্তিতেই এই জবাব দেওয়া হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ২২ বছর পর ছাপা হতে চলেছে ১ টাকার নোট
সরকারের অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন নেতাজির পরিবারের সদস্যদের একাংশ। আর ফরওয়ার্ড ব্লকের জাতীয় সম্পাদক জি দেবরাজনের প্রশ্ন, অন্তর্ধান রহস্য সর্বশেষ খতিয়ে দেখেছেন যাঁরা, সেই বিচারপতি মনোজ মুখোপাধ্যায় কমিশনই বলেছিল, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে তাইওয়ান সরকারের পাঠানো চিঠিও কমিশনের হাতে আসে। যেখানে বলা হয়েছিল, ওই বিশেষ দিনটিতে তো নয়ই, তার আগে বা পরের সাত দিনের মধ্যেও তাইহোকু বিমানবন্দরে কোনও বিমান দুর্ঘটনা ঘটেনি। ফলে সরকার কী ভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছল, প্রশ্ন তোলেন তিনি।