নিটের প্রশ্নফাঁস নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কী ভাবে নিটের প্রশ্নফাঁসের প্রক্রিয়া চালানো হয়েছিল, সে বিষয়ে মুখ খুললেন বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি। ইন্ডিয়া টুডে-র বিশেষ তদন্তকারী দল সেই ব্যক্তিকে খুঁজে বার করেছে। নাম বিজেন্দ্র গুপ্ত। তিনি প্রশ্নফাঁসের অন্যতম এক ‘গুরু’।
প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় এর আগে দু’বার গ্রেফতারও হয়েছিলেন বিজেন্দ্র। কিন্তু পরে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছিলেন। নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রশ্নফাঁসের সেই ‘গুরু’ই মুখ খুললেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মার্চেই বিজেন্দ্রের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিয়োতে তিনি দাবি করেছিলেন, নিটের প্রশ্ন ফাঁস হতে চলেছে। ঘটনাচক্রে দেখা গিয়েছে, নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। যা নিয়ে গোটা দেশ তোলপাড়।
ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজেন্দ্রও বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম চক্রী। ২০২৩ সালে ওড়িশা স্টাফ সিলেকশন কমিশন, বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বিজেন্দ্রের বিরুদ্ধে। ২৪ বছর ধরে তিনি এই কীর্তির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গিয়েছে। বিজেন্দ্রের দাবি, এই ধরনের কাজে নেটওয়ার্কটাই আসল!
ইন্ডিয়া টুডে-র কাছে বিজেন্দ্র দাবি করেছেন, নিটের প্রশ্ন ফাঁস করে ২০০-৩০০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্য ছিল চক্রীদের। এর জন্য বাছা হয়েছিল ৭০০ পরীক্ষার্থীকে। কী ভাবে প্রশ্ন ফাঁসের প্রক্রিয়া চলেছে, ইন্ডিয়া টুডে-র একটি ‘স্টিং অপারেশনে’ জানিয়েছেন বিজেন্দ্র। তাঁর দাবি, প্রশ্নপত্র পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পৌঁছনোর আগে রাস্তাতেই কিছু প্রশ্ন সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। যে গাড়ি করে প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। এ প্রসঙ্গে বিজেন্দ্র সঞ্জীব মুখিয়া এবং বিশাল চৌরাসিয়ারও নাম উল্লেখ করেন। ঘটনাচক্রে, এই দু’জনের বিরুদ্ধেই নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে।
এখনও সঞ্জীবের হদিস পায়নি পুলিশ এবং সিবিআই। বিজেন্দ্রের দাবি, এক দশক ধরে তিনি এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আগে অন্যের হয়ে পরীক্ষায় বসতেন। বিজেন্দ্রের আরও দাবি, সঞ্জীবের ৩০ কোটি দেনা। কিন্তু তার পরেও এই চক্র চালিয়ে গিয়েছেন। তাঁর আরও দাবি, এই মামলায় জেল হবে। কিন্তু কত দিন? আবার জামিন পেয়ে এই খেলা শুরু হবে। কী ভাবে ৭০০ পরীক্ষার্থীর হাতে প্রশ্নপত্র পৌঁছেছিল? এই প্রশ্ন করা হলে বিজেন্দ্র জানান, এটা শুধু নেটওয়ার্কের খেলা। শক্তিশালী নেটওয়ার্ক হতে হবে। তাঁর কথায়, “দিল্লি এবং পটনায় ৩০০ পরীক্ষার্থী ছিলেন। আরও কয়েক জায়গায় বাকি পরীক্ষার্থী। তাঁদের কাছে বিভিন্ন দলে ভাগ করে লোক পাঠানো হয়েছিল।”