নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
সংসদ খোলা মাত্র শাসক পক্ষকে চেপে ধরার রাস্তাতেই যাচ্ছে বিরোধীরা। গুজরাতে প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে তাঁর পূর্বসূরি মনমোহন সিংহকে পাকিস্তানের সঙ্গে নাম জড়িয়ে কাঠগড়ায় তুলেছেন, তার প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার রাজ্যসভা অচল করতে চায় কংগ্রেস। এই প্রশ্নে কংগ্রেসের পাশেই অন্য বিরোধীরা।
গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনের জন্যই এ বার সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বসছে দেরিতে। হিমাচল ও গুজরাতের বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার আগে শুধু আজকের দিনটাই পাচ্ছে বিরোধীরা। তাই মোদীর পাকিস্তান মন্তব্য নিয়ে হইচই করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না তারা। গুজরাতে বিজেপি মসৃণ জয় পেলে প্রত্যাশিত ভাবেই তারা আবার পাল্টা আক্রমণাত্মক হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সংসদের রণকৌশল ঠিক করার জন্য সোমবার ফের আলোচনায় বসবে বিরোধীরা। ওই দিনই দুই রাজ্যের ফল ঘোষণা হবে।
অধিবেশন শুরুর আগে বৃহস্পতিবার সংসদে সর্বদল বৈঠকে বিএসপি ছা়ড়া হাজির ছিল বাকি প্রায় সব দলই। কংগ্রেসের তরফে গুলাম নবি আজাদ ও মল্লিকার্জুন খড়্গে পাকিস্তান মন্তব্যের প্রসঙ্গ এনে প্রধানমন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশের দাবি তোলেন। তাঁরা স্পষ্টই জানিয়ে দেন, সরকারের তরফে কোনও আশ্বাস না পেলে তাঁরা অধিবেশনে হইচই করবেন। কংগ্রেসকে সমর্থন জানিয়েছেন অন্যান্য বিরোধী নেতৃত্বও। তবে শোকপ্রস্তাব হয়ে লোকসভার অধিবেশন আজ মুলতবি হয়ে যাবে। ফলে সেখানে এ নিয়ে সরব হওয়ার সুযোগ প্রথম দিন অন্তত থাকছে না। বিজেপি নেতারা পাল্টা জানান, ভোট-প্রচারে বা কোনও কর্মসূচিতে গিয়ে কারও মন্তব্য নিয়ে আলোচনা করতে হলে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে যা যা বলা হয়েছে, সে সবও তোলা হবে। সর্বদল বৈঠকেই ইঙ্গিত মিলছে, শীতকালীন অধিবেশন গোড়াতেই উত্তপ্ত হবে।
তৃণমূলের তরফে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও’ব্রায়েন এ দিনের বৈঠকে ছিলেন। রাজ্যসভা ও লোকসভার দু’জন বাদে অন্য তৃণমূল সাংসদেরা অবশ্য আজ দিল্লিতে থাকছেন না। তাঁরা তৃণমূল ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা কোর কমিটির বৈঠকে থাকবেন। তবে কংগ্রেসের পাকিস্তান সংক্রান্ত দাবিকে তাঁরা সমর্থন জানিয়েছেন। পাশাপাশিই ডেরেক বলেন, ‘‘আমরা বিষয়ভিত্তিক কিছু আলোচনা চেয়েছি। আধার সংযোগ, কর্মসংস্থান, জিএসটি, মন্থর অর্থনীতি ও মূল্যবৃদ্ধি, কৃষকদের সমস্যা, নোটবন্দি— এই বিষয়গুলি আমরা এই অধিবেশনে তুলব।’’ এডিএমকে, ডিএমকে এবং বামেরা ঘূর্ণিঝড় ‘অক্ষি’র জেরে তামিলনাড়ু ও কেরলে ক্ষয়ক্ষতির প্রসঙ্গ তুলেছে সর্বদল বৈঠকে।
তৃণমূল দাবি জানিয়েছে, বাইরে নানা অনুষ্ঠান থাকায় ১ জানুয়ারি সংসদের অধিবেশন বন্ধ রাখা হোক। তা ছাড়া, সে দিন তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস হওয়ায় দলের সাংসদদের সেই সংক্রান্ত কর্মসূচিও থাকে।