NDA

বিরোধী বৈঠকের দিনই এনডিএ বৈঠকের ডাক

একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরেই বিজেপি দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে এনডিএ শরিকদের প্রয়োজন হ্রাস পেয়েছিল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের কাছে। এর মধ্যে এনডিএ জোটের সাবেক গড়নেও অনেক বদল হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৩ ০৭:২৫
Share:

এনডিএ জোটে নতুন করে প্রাণসঞ্চার করতে বৈঠক ডাকা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

আগামী ১৮ জুলাই দিল্লিতে এনডিএ জোটের বৈঠক ডাকল বিজেপি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই সময়েই বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোটেরও বৈঠক হওয়ার কথা। বিরোধীদের তৎপরতা এবং লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসাতেই এনডিএ জোটে নতুন করে প্রাণসঞ্চার করতে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে শিরোমণি অকালি দল, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি নতুন করে যোগ দেয় কি না, তা নিয়েই শুরু হয়েছে চর্চা। মন্ত্রিসভায় সম্ভাব্য রদবদল নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। তারই মধ্যে আজ রাতে অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেছেন।

Advertisement

একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরেই বিজেপি দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে এনডিএ শরিকদের প্রয়োজন হ্রাস পেয়েছিল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের কাছে। এর মধ্যে এনডিএ জোটের সাবেক গড়নেও অনেক বদল হয়েছে। কৃষি আইনের বিরোধিতা করে শিরোমণি অকালি দল জোট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। বিহারে নীতীশ কুমারের বিরোধিতা করে এনডিএ ছাড়েন এলজেপি-র চিরাগ পাসোয়ান। পরে সেই জেডিইউ আবার এনডিএ ছেড়ে বিহারে আরজেডি ও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। মহারাষ্ট্রে এনডিএ ছেড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলায় শিবসেনা। হরিয়ানায় জেজেপি-র সঙ্গেও চলছে মনান্তর।

উল্টো দিকে মহারাষ্ট্রেই আবার শিবসেনা ভেঙে এখন শিন্দে গোষ্ঠী বিজেপির সঙ্গে। সদ্য সেই জোটে যোগ দিয়েছেন এনসিপি ভেঙে আসা অজিত পওয়ার গোষ্ঠী। কিন্তু কর্নাটকে হার, বিরোধীদের একজোট হওয়া এবং আসন্ন পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট মাথায় নিয়ে শরিকদের প্রয়োজন আবার অনুভব করতে শুরু করেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। বিশেষ করে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জেতার প্রশ্নে দলের মধ্যে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। পুরনো শরিকদের কাছে টানার লক্ষ্য নিয়ে তাই এনডিএ জোটের বৈঠক ডেকেছে বিজেপি, যা গত দু’তিন বছরে দেখা যায়নি।

Advertisement

যেমন, সূত্রের মতে, বিগত কিছু সময়ে ধরেই শিরোমণি অকালি দলকে ফের পাশে পাওয়ার চেষ্টায় সক্রিয় রয়েছেন জেপি নড্ডারা। আসন্ন মন্ত্রিসভার রদবদলেও সুখবীর সিংহ বাদল বা তাঁর স্ত্রী হরসিমরত কউরকে ফের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার জল্পনা আছে। সম্প্রতি ওই রাজ্যের বিজেপি সভাপতি করা হয়েছে হিন্দু নেতা সুনীল জাখরকে। অকালির শিখ ভোট ও জাখরকে সামনে রেখে হিন্দু ভোটকে কাছে টানার লক্ষ্যেই ওই উদ্যোগ। তবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির ব্যাপারে বেসুর গেয়ে রেখেছে অকালি। পঞ্জাবে দলের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা বিজয় রূপাণী আজ দাবি করেছেন, ‘‘ওই রাজ্যের ১৩টি লোকসভা আসনে একাই লড়বে বিজেপি।’’

বিহারে জিতন রাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার সঙ্গেও সম্প্রতি হাত মিলিয়েছে বিজেপি। আসন্ন এনডিএ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন তিনি। পাশাপাশি রামবিলাস পাসোয়ানের এলজেপি এখন দুই অংশে বিভক্ত। রামবিলাসের ভাই পশুপতি পরস গোড়া থেকেই বিজেপির সঙ্গে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। রামবিলাস-পুত্র চিরাগ গত বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের বিরোধিতা করায় তাঁকে নীতীশের চাপে এনডিএ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। চিরাগ এখন এনডিএতে ফিরতে আগ্রহী। তিনিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিজেপির কাছে। পরশের সঙ্গে তাঁকেও বিজেপি মন্ত্রিসভায় শেষ পর্যন্ত জায়গা দেয় কি না, সেটা দেখার।

সম্প্রতি টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডু এসে দেখা করেছিলেন অমিত শাহের সঙ্গে। সূত্রের মতে, নায়ডুও এনডিএ-তে ফিরতে আগ্রহী। তবে দিন কয়েক আগে এনটি রামরাও-এর মেয়ে ডি পুরন্দেশ্বরীকে অন্ধ্রপ্রদেশের সভাপতি করেছে বিজেপি। সে ক্ষেত্রে নায়ডুর দল শেষ পর্যন্ত এনডিএ-তে যোগ দেয় কি না, সেটাও দেখার।

আজ লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে গুয়াহাটিতে পূর্ব জ়োনের বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। সেখানে উত্তর পূর্বের রাজ্য ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ওড়িশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের পক্ষ থেকে অবশ্য কেবল উপস্থিত ছিলেন অনুপম হাজরা। তবে রাজ্যের দায়িত্ব থাকা কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডেরা বৈঠকে ছিলেন। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বিধানসভার বুথ পর্যায়ের সংগঠনকে মজুবত করে সন্ত্রাস রোখার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। আগামিকাল দিল্লিতে হবে উত্তর জ়োনের বৈঠক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement