লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা নিয়ে উদ্ধব ঠাকরে, রাহুল গান্ধীর দলের সঙ্গে দর কষাকষির প্রস্তুতি শরদ পওয়ারের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মুখ্যমন্ত্রিত্ব, ‘শিবসেনা’ নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক হারানোর পরে দৃশ্যতই বেকায়দায় উদ্ধব ঠাকরে। ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’ জোটের আর এক সহযোগী কংগ্রেস মহারাষ্ট্রে নেতৃত্বহীনতায় ভুগছে। আর সেই মওকা বুঝেই লোকসভা ভোটের আগে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার ‘বড় দর’ হাঁকতে চলেছেন বলে জল্পনা মরাঠা রাজনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার লোকসভা ভোটের কৌশল স্থির করতে দলের নেতাদের নিয়ে শরদের বৈঠকে সেই জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে।
সোমবার মুম্বইয়ের ওয়াইবি চহ্বান সেন্টারে এনসিপি নেতাদের লোকসভা ভোটের কৌশল স্থির করতে ডেকেছিলেন শরদ। এনসিপি বিধায়ক তথা শরদের নাতি রোহিত পওয়ার বলেন, ‘‘আগামী বছরের গোড়ায় লোকসভা ভোট। বছরের শেষে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী কৌশল স্থির করতেই বৈঠকে বসেছি আমরা।’’ প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই এনসিপির নেতৃত্ব ছাড়ার বার্তা দিয়েছিলেন শরদ। শেষ পর্যন্ত দলের নেতা-কর্মীদের আবেদন মেনে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পরে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হলেন তিনি।
মহারাষ্ট্রে লোকসভা আসনের সংখ্যা ৪৮। ২০১৯ সালের ভোটে কংগ্রেসের সহযোগী হিসাবে ১৯টিতে লড়ে ৪টি জিতেছিল এনসিপি। ২৫টি লড়ে কংগ্রেসের ঝুলিতে আসে মাত্র ১টি! এনসিপি এবং কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী নবনীত রানা অমরাবতী কেন্দ্রে জিতেছিলেন। তবে তিনি এখন বিজেপি শিবিরে। অন্য দিকে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপির সহযোগী হিসাবে ২৩টি আসনে লড়ে ১৮টিতে জয় পেয়েছিল শিবসেনা। যদিও ইতিমধ্যেই তার মধ্যে ১২ জন সাংসদ যোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবিরে।
এই পরিস্থিতিতে ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’ জোটের ‘বড় শরিক’ হিসেবে এনসিপিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য শরদ বেশি আসনে লড়তে চাইছেন বলে জল্পনা রয়েছে। আর লোকসভা ভোটে সাফল্য পেলে বিধানসভাতেও দুই জোটসঙ্গীর উপর ‘চাপ’ বাড়াতে পারবেন তিনি। গত ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, মহারাষ্ট্রে বিধানসভায় কংগ্রেস-এনসিপি আসন সমঝোতা কখনও মসৃণ ভাবে হয়নি। ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত এক টানা ১৫ বছর মহারাষ্ট্রে এই জোট সরকার চলছে। কিন্তু প্রতিটি ভোটেই কমবেশি টানাপড়েন হয়েছে আসন রফা নিয়ে। এ বার জোটে উদ্ধবের যোগদানের ফলে টানাপড়েন আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ভোট পণ্ডিতদের একাংশ মনে করছেন।