—ফাইল চিত্র।
মাদক-কাণ্ডে গ্রেফতার আরিয়ান খানের মুক্তিতে শাহরুখ খানের থেকে মোটা টাকা আদায়ের ছক কষেছিলেন মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এনসিবি)-র সাক্ষী কিরণ পি গোসাভি। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য এনসিবি-কর্তা সমীর ওয়াংখেড়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করলেন এ মামলার আর এক সাক্ষী প্রভাকর সইল।
এই মামলায় গোসাভির দেহরক্ষী হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়েছেন প্রভাকর। তাঁর দাবি, মামলার আর এক সাক্ষী স্যাম ডি’সুজার সঙ্গে টাকা আদায় নিয়ে কথাবার্তাও হয়েছিল। স্যামকে ২৫ কোটি টাকা আদায় করার কথা বলেছিলেন গোসাভি। তবে ব্যাপারটা যাতে ১৮ কোটি টাকার মধ্যেই মেটে, সে পরামর্শও দিয়েছিলেন। ওই টাকার মধ্যে ৮ কোটি দেওয়া হত সমীরকে এবং বাকি ১০ কোটি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করা হত।
প্রসঙ্গত, আরিয়ানের গ্রেফতারির পর গোসাভির সঙ্গে শাহরুখের সহকারী পূজা দাদলানি দেখা করেন। সেই সাক্ষাতের ছবি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। তা নিয়েও চাঞ্চল্যকর দাবি প্রভাকরের। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মোবাইল নম্বর সমীর ওয়াংখেড়ের নামে সেভ করে রেখেছিলেন গোসাভি। লোয়ার পারেল ব্রিজে পূজার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় গোসাভির নির্দেশ মতো আমি ওঁকে ফোন করি। যাতে পূজাকে এটা বোঝানো যায় যে, সমীরই গোসাভিকে ফোন করছেন।’’
শাহরুখের থেকে টাকা আদায়ের ছকের কথা যে সমীর জানতেন, তেমনও দাবি প্রভাকরের। এক রাতে কোলাবায় স্যামের সঙ্গে দেখা করার জন্য যাওয়ার সময় গোসাভির সঙ্গী ছিলেন তিনি। সে সময়ই মোবাইলে সমীরের সঙ্গে গোসাভির কথোপকথন হয় বলে জানিয়েছেন প্রভাকর। তিনি বলেন, ‘‘গোসাভির মোবাইলে একটি ফোন এলে তাতে সমীরের নাম ফুটে উঠেছিল, দেখতে পেয়েছিলাম। শুনলাম যে গোসাভি বলছেন, ‘স্যর, কিছু দিন অপেক্ষা করে যান। টাকাপয়সা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। আমি আপনাকে ফোন করে জানাব। তবে তার আগে কোনও পদক্ষেপ করবেন না।’’’
প্রভাকর জানিয়েছেন, পরের দিন সকালে তাঁকে মহালক্ষ্মী এলাকায় ৫০ লক্ষ টাকা সংগ্রহের জন্য পাঠিয়েছিলেন গোসাভি। পাশাপাশি, সুনীল পাটিল নামে এক ব্যক্তিকেও ২৩ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন প্রভাকর। সুনীলের কথা মতো এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ টাকা ট্রান্সফারও করেন তিনি। প্রভাকরের দাবি, ‘‘৩ অক্টোবর ভাসি ব্রিজের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ভর্তি একটি ব্যাগ সংগ্রহ করতে বলেন গোসাভি। তা নিয়ে ইনরবিট মলের কাছে যেতে বলেছিলেন। মলের কাছে যেতেই গোসাভি সেখানে পৌঁছন। এর পর ওই ব্যাগে আরও টাকা ভরে দেন। আমাকে বলেন, ‘চার্চগেটে যাও। সেখানে স্যাম ডি’সুজা তোমাকে ফোন করবে।’ আমাকে ২৩ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করতেও বলেছিলেন। চার্চগেটে পৌঁছে দেখি স্যাম এসে অন্য এক জনের থেকে আরও ২৩ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করছে। এর পর মোট ৩৮ লক্ষ টাকা নিয়ে গোসাভির কাছে ফিরে আসি আমরা। সব টাকা স্যামের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই টাকা নিয়ে স্যাম চলে যান।’’
তবে প্রভাকরের দাবি মতো সেই টাকা আদৌ স্যামকে দেওয়া হয়েছিল কি না, বা দেওয়া হলে সেই টাকা কার কাছে পৌঁছল, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তদন্তও চলছে।