—ফাইল চিত্র।
তাঁর আপত্তি শিরোধার্য করে মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী অ্যাডভোকেট জেনারেলকে ইস্তফা দিতে বলার পরে পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে তাঁর পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিলেন নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। তবে দলকে হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন— নতুন অ্যাডভোকেট জেনারেল নিয়োগ হওয়ার পরেই তিনি দলের দফতরে এসে বসবেন।
সিধুর আপত্তি সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী চন্নী সিনিয়র আইনজীবী এ পি এস দেওলকে অ্যাডভোকেট জেনারেল নিয়োগ করে বার্তা দিয়েছিলেন, সরকারের কাজে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের হস্তক্ষেপকে তিনি আমল দেবেন না। সঙ্গে সঙ্গে খেপে গিয়ে নিজেদের দলের সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন রাহুল-প্রিয়ঙ্কার প্রিয়পাত্র বলে পরিচিত সিধু। সেই চিঠি সংবাদ মাধ্যমে ফাঁসও করে দেন। টালবাহানার পরে রাহুল গাঁধীর মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত সন্ধি হয় চন্নী ও সিধুর। ঠিক হয় চন্নী প্রদেশ সভাপতির অপছন্দের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বদল করলে সিধুও ইস্তফা তুলে নেবেন।
শনিবার সিধু সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, তিনি ইস্তফা ফিরিয়ে নিয়েছেন। একই সঙ্গে বলেন, “তবে নতুন অ্যাডভোকেট জেনারেল নিয়োগের দিকে তাকিয়ে আছি। সেটা হওয়ার পরেই দলের দফতরে বসা শুরু করব।” এই হুঁশিয়ারির তাৎপর্য রয়েছে বলে জানাচ্ছে দলের সূত্র। সিধুর তোপের মুখে দেওল সোমবার পদত্যাগপত্র পাঠালেও মুখ্যমন্ত্রী তা গ্রহণ করেছেন কি না, সেটা স্পষ্ট নয়। সরকারি সূত্রের খবর, চন্নী এখনও গ্রহণ করেননি দেওলের ইস্তফা। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী যাতে না পদত্যাগ খারিজ করে দেওলকে কাজ চালিয়ে য়েতে বলেন, সেই জন্যই নতুন শর্ত আরোপ করে তাঁকে চাপে রাখলেন সিধু।
সামনের বছরেই নির্বাচন পঞ্জাবে। তার আগে দল ও সরকার নিয়ে যে নাটক চলছে, তার প্রভাব ভোটারদের মধ্যে পড়তে পারে বলে মনে করছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ। হতাশ হয়ে পঞ্জাবের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন এআইসিসি-র নিযুক্ত পর্যবেক্ষক হরীশ রাওয়ত। নিজের অনুগত হরীশ চৌধুরীকে সেই দায়িত্ব দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। এর পরে ঐক্য দেখাতে চন্নী ও সিধু কেদারনাথ সফর করে আসেন। কিন্তু তাতেও যে দুই নেতার মনোমালিন্য কাটেনি, এ দিনের ঘটনা তার প্রমাণ। কিন্তু সিধু যে ভাবে নিজের দলকেই হুমকি-হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, সরকারের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করছেন, তার পরেও কংগ্রেস সরকারে ফেরে কি না, সেটাই দেখার।