নরেন্দ্র সিংহ তোমর ফাইল চিত্র
মাঝে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধান। আর তার মধ্যেই একেবারে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। বললেন, কৃষি আইন ফের কার্যকর করার কোনও অভিপ্রায় নেই কেন্দ্রের। এমনকি তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলেও দাবি করলেন তোমর।
নতুন করে কৃষি আইন কার্যকর করবে না কেন্দ্র। শনিবার স্পষ্ট করে জানালেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর।
শুক্রবার মহারাষ্ট্রে একটি অনুষ্ঠানে তোমর বলেন, ফের কার্যকর করা হতে পারে কৃষি আইন। কৃষিমন্ত্রীর এই মন্তব্যের জেরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়৷ কৃষি আইন নিয়ে দেশব্যাপী কৃষকদের ক্ষোভের মুখে পড়ে গত মাসে তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করে কেন্দ্র। এই আইনগুলিই পুনরায় কার্যকর হতে পারে বলে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী দাবি করেন। মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরেই কংগ্রেস অভিযোগ করে, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পর সংশোধনী সহ তিনটি কৃষি আইন ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে মোদী সরকার।
চাপের মুখে পড়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তড়িঘড়ি নিজের বয়ান পাল্টে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী জানান, ‘‘আমি এই কথা বলিনি। আমি বলেছিলাম সরকার ভাল আইন করেছে। আমরা কয়েকটি কারণে সেগুলি ফিরিয়ে নিয়েছি। সরকার কৃষকদের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যাবে।’’ তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তোমর।
তোমরের এই মন্তব্যের পর কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। কেন্দ্র কৃষকদের অপমান করেছে বলে আক্রমণ করেন রাহুল।
প্রসঙ্গত, তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন নিয়ে দেশ জুড়ে আন্দোলনে সামিল হয় দেশের বিভিন্ন কৃষকগোষ্ঠী৷ দিল্লির উপকণ্ঠে সিঙ্ঘু সীমানায় আন্দোলনের কারণে কৃষকদের সমালোচনা করেন বিজেপি-র বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীরা৷ দফায় দফায় কৃষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কেন্দ্র। কিন্তু সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে অচলাবস্থা চলার পর অবশেষে পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের তিন মাস আগে কৃষি আইনগুলি প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তবে এর পরেও থামেননি কৃষকরা৷ শেষে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং কৃষকদের বাকি দাবি-দাওয়া কেন্দ্র মেনে নেওয়ার পর ১১ ডিসেম্বর আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় কৃষক সংগঠনগুলি৷ ফাঁকা করে দেওয়া হয় সিঙ্ঘু সীমানা।
এর পর কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর শুক্রবারের মন্তব্য উস্কে দেয় অনেক জল্পনা৷ তবে কি আসন্ন নির্বাচনে পঞ্জাব দখলের উদ্দেশ্যে সাময়িক ভাবে আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার? এমনই প্রশ্ন করে সরব হন বিরোধীরা। চাপের মুখে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা করেন তোমর।