—ফাইল চিত্র
পিএম কিসান মেনে নিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে এ নিয়ে বিজেপির আক্রমণের রাস্তাই বন্ধ করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পিএম কিসান প্রকল্পের জন্য আবেদনকারীদের তথ্য দিলে রাজ্য তা যাচাই করে দেবে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরকেও সে কথা জানিয়ে দেন তিনি। বুধবার তোমর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠির জবাবে জানিয়েছেন, রাজ্যের আমলারা কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করলেই কৃষকদের জন্য পিএম কিসানের টাকা মঞ্জুর শুরু হয়ে যাবে।
এতে কৃষকদের ফায়দা হবে ঠিকই। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বলেছিলেন, চাষিরা বাড়তি কিছু টাকা পেলে পাক। কিন্তু এতে বিজেপি নেতারা হাত কামড়াচ্ছেন। তাঁদের আফসোস, মমতা আচমকা পিএম কিসান প্রকল্প মেনে নেওয়ায় বিজেপির একটা বড় অস্ত্র হাতছাড়া হয়ে গেল। কারণ এত দিন বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, তৃণমূল সরকার রাজনৈতিক কারণে রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারত, পিএম কিসানের মতো প্রকল্প আটকে রেখেছে। গত ২৫ ডিসেম্বরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ তুলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে’ রাজ্যের ৭০ লক্ষ কৃষকের ‘পিএম-কিসান’ প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এই প্রকল্পে বছরে ৬ হাজার টাকা করে দেয় কেন্দ্র। বাংলার প্রায় ২৩ লক্ষ কৃষক অনলাইনে আবেদন করেছেন। কিন্তু তাঁদের টাকাও মমতার সরকার আটকে রেখেছে বলে আঙুল তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার রাজ্যপাল জগদীপ খনখড় তমলুকে বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিয়েও ঠিক একই অভিযোগ তুলেছেন।
কিন্তু তোমর আজ মুখ্যমন্ত্রীকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে কার্যত এই আক্রমণের দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মমতা বলেছিলেন, পিএম কিসান পোর্টালে যাঁরা সরাসরি আবেদন করেছেন, রাজ্য তাদের তথ্য যাচাই করে দেবে। তোমর মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, এই যাচাইয়ের কাজের জন্য রাজ্য এক জন নোডাল অফিসার ও একটি নোডাল সংস্থা ঠিক করে দিক। কৃষি মন্ত্রক তাঁদের পিএম কিসান পোর্টালের আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে দেবে। তাঁরা নিজেরাই আবেদনকারীদের তথ্য দেখে নিতে পারবেন। চাষিদের চিহ্নিত করার পরে তাঁদের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দরকার হবে। যেখানে পিএম কিসানের টাকা যাবে। রাজ্যের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রশাসনিক খরচের টাকা পাঠিয়ে দেবে কেন্দ্র। রাজ্য সহযোগিতা ও পদক্ষেপ শুরু করলেই টাকা বিলি হবে।
বিজেপি নেতারা বলছেন, এর আগে মমতা রাজ্যের সকলের জন্য স্বাস্থ্যসাথী বিমা প্রকল্প চালু করে দিয়েছেন। আয়ুষ্মান ভারতেও সকলের জন্য বিমার বন্দোবস্ত থাকে না। ফলে মমতা আয়ুষ্মান ভারত চালু না করায় রাজ্যের মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগের উপায় নেই। এ বার পিএম কিসানের টাকা থেকে রাজ্যের মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগের রাস্তাও বন্ধ হতে চলেছে।