প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশে ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই মেরুকরণের পথে হাঁটছে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য হিন্দুত্বের পালে জোরালো হাওয়া দেওয়ার চেষ্টায় গেরুয়া শিবির। মকর সংক্রান্তিতে শস্য উৎসবের দিনে আমজনতাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের ‘উজ্জ্বল সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের’ দিকটি তুলে ধরেছেন। এই সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে উৎসব হয় আলাদা আলাদা করে তার উল্লেখ করেছেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, মকর সংক্রান্তিতে মোদীর এই তৎপরতা সুকৌশলে হিন্দুত্বের পালে হাওয়া দেওয়া।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সামনেই পাঁচ রাজ্যে ভোট। তার পর লোকসভার প্রস্তুতি। বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য মকর সংক্রান্তির মতো উপলক্ষ আর হয় না। এর আগেও এই দিনটিকে কাজে লাগিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে সংযোগ করতে দেখা
গিয়েছে মোদীকে।
আজ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “গোটা দেশে আমরা বিভিন্ন উৎসব পালন করি। যা ভারতীয় সংস্কৃতির উজ্জ্বল বৈচিত্রকেই তুলে ধরে। সকলকে জানাই শুভেচ্ছা।” তাঁর কথায়, “তামিলনাড়ুর উজ্জ্বল উৎসবের সঙ্গে সমার্থক পোঙ্গল। এই উপলক্ষে তামিলনাড়ুর সবাইকে বিশেষ করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যাঁরা ছড়িয়ে রয়েছেন, তাঁদের আমার শুভেচ্ছা জানাই।” পাশাপাশি মোদী টুইট করে ‘মাঘ বিহু’র শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অসমের বাসিন্দাদের।
দেশের এক এক প্রান্তে এই উৎসবের এক এক নাম। উত্তরপ্রদেশে এই উৎসব ‘উত্তরায়ণ’ নামে পরিচিত। ‘ঘুঘুটি’ বা ‘মকর সংক্রান্তি’ও বলা হয়ে থাকে। অন্ধ্রপ্রদেশে এই উৎসবকে বলা হয় ‘পেড্ডা পান্ডুগা’। ওড়িশায় নাম ‘মকর চাউলা’ বা ‘মকর সংক্রান্তি’। বিহারে অনেকে একে ‘তিল সংক্রান্তি’ হিসেবে পালন করেন। মহারাষ্ট্র এবং গোয়ায় এই উৎসব পরিচিত ‘হলদি কুমকুম’ নামে। অনেকে আবার ‘মাঘি সংক্রান্তি’ বলেন। গুজরাতে এ দিন ঘুড়ির উৎসব হয়। সেখানেও ‘উত্তরায়ণ’ নামে ডাকা হয় দিনটিকে। ভোটমুখী পঞ্জাবে এর নাম ‘মাঘি’। এ দিন সেখানে লোরি উৎসব পালন করা হয়।
আজ মকরসংক্রান্তিতে সর্ব জাতপাতের মানুষকে হিন্দুত্বের মঞ্চে নিয়ে আসতে দেশব্যাপী ১০ দিনের প্রচার শুরু করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাদের বার্তা— ‘সব হিন্দুই এক’। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এই প্রচার সরাসরি উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে ভোটের দিকে তাকিয়েই করা হচ্ছে। সেখানে বিজেপি-র জেতার প্রধান রাস্তাই হল সমস্ত হিন্দু ভোটকে সুসংহত করা। দলের তরফে চেষ্টা হচ্ছে, জাত, বর্ণভেদে ভাগ হয়ে থাকা হিন্দু ভোট যেন এসপি, আরএলডি, বিএসপি বা কংগ্রেসের দিকে চলে না যায়। রীতিমতো কৌশল করে ২০১৭ সালের ভোটেও ‘আমরা সবাই হিন্দু’ প্রচারের কাজ শুরু করেছিল বিজেপি।