প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি।
ফরাসি ভাষা শেখার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তখন অবশ্য তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হননি। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীও হননি। মোদী তখন আরএসেএসের প্রচারক। দেশের জরুরি অবস্থা চলাকালীন বছর খানেক আগেও ছদ্মবেশে পালিয়ে বেড়িয়েছেন গ্রেফতারির ভয়ে। সবে ৩০ ছুঁয়েছে বয়স। সেই সময়েই আমদাবাদে ফরাসি ভাষা শিক্ষার প্রতিষ্ঠান আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ-এ ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ৪০ বছর পার করে সেই প্রতিষ্ঠানে সদস্য হিসাবে মোদীর পরিচয়পত্র প্রকাশ্যে এল।
দু’দিনের সফরে ফ্রান্সে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বৃহস্পতিবারই পৌঁছেছেন প্যারিসে। দেখা করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁর সঙ্গে। ফ্রান্সে থাকা প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন মোদী। প্যারিসের ‘লা সেইন মিউজিকাল’ প্রেক্ষাগৃহে প্রবাসীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন। সেখানে নিজেই এ ব্যাপারে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
মোদী বলেছেন, ‘‘ফ্রান্সের সঙ্গে, ফরাসি সংস্কৃতির সঙ্গে আমার ৪০ বছরের সম্পর্ক। ১৯৮১ সালে আমদাবাদে যাত্রা শুরু করেছিল আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ। তাদের প্রথমদিকের সদস্য ছিলাম আমি।’’ ‘আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ’ ফ্রান্সের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। গোটা বিশ্বেই তারা ফরাসি ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রচার করে থাকে। শুক্রবার প্যারিসে মোদী তাদের সদস্য হওয়ার কথা ঘোষণা করার পর, ওই প্রতিষ্ঠানে মোদীর সদস্যপদের পরিচয় পত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে ভারত সরকারের তরফে । তাতে দেখা যাচ্ছে, ১৯৮১ সালের ৫ ডিসেম্বর তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের একাদশতম সদস্য হিসাবে নিজের নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। ১২৫ টাকা দিয়ে ওই সদস্যপদ নিয়েছিলেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
নরেন্দ্র মোদীর সদস্য পদের সেই পরিচয়পত্র। ছবি: সংগৃহীত।
মোদীর ওই সদস্যপদের কথা বছর আটেক আগেই জানিয়েছিল আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ। ২০১৫ সালের এপ্রিলে আমেদাবাদের এই ফরাসি ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জানায়, মাস দুয়েক আগেই অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে পুরনো সদস্যপদের ফাইল থেকে মোদীর নামের ওই সদস্যপত্রটি উদ্ধার করে তারা। তখন সবে এক বছর হল দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মোদী। সদস্য হিসাবে তাঁর নাম দেখে আরও খোঁজ খবর নেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ কর্তৃপক্ষ। নিশ্চিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীকে ওই পরিচয়পত্রটি পাঠান তিনি। একই সঙ্গে সেটি তাঁরা প্রতিষ্ঠানে প্রদর্শনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন কি না তা জানতে চান। প্রধানমন্ত্রী অনুমতিক্রমেই আমদাবাদের ওই প্রতিষ্ঠানে প্রদর্শন করে রাখা হয় পরিচয়পত্রটি।
তবে সদস্য পদ নিলেও মোদী শেষ পর্যন্ত ফরাসি ভাষা শিখতে পেরেছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। ওই পরিচয়পত্রটি খুঁজে পাওয়ার পর সংস্থাটির সাংস্কৃতিক কো অর্ডিনেটর নির্জা পার্মার জানিয়েছিলেন, পুরনো ফাইল ঘাঁটতে গিয়েই মোদীর সদস্য পদের পরিচয় পত্রটি হাতে আসে তাঁর। আমদাবাদের ওই প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা ফ্রেডেরিক টারজান জানিয়েছেন, মোদী কী ধরনের সদস্য ছিলেন, তা জানতে সংস্থার পূর্বতন অধিকর্তা ফিলিপ মার্টিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। ফিলিপ তাঁকে জানান, মোদী নিয়মিত ওই সংস্থার গ্রন্থাগারে যাতায়াত করতেন, পড়াশোনা করতেন এমনকি, ফরাসি সিনেমার প্রতিও আগ্রহ ছিল তাঁর।