ফাইল চিত্র।
কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কে টানাপড়েন এবং জিএসটি ঘিরে তৈরি হওয়া জটিলতার মধ্যেই ৭ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দেবেন কি না, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। গত বছর ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি যোগ দেননি। তার আগে ২০১৯ সালে শেষ বার হওয়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের মুখোমুখি বৈঠকও এড়িয়ে গিয়েছিলেন মমতা। তাঁর যুক্তি ছিল, নীতি আয়োগের এই বৈঠকে কাজের কাজ কিছু হয় না।
সরকারি সূত্রের খবর, কোভিড পরিস্থিতি আরও ঘোরালো না হলে, এ বারের নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠক ভার্চুয়াল মাধ্যমে না করে মুখোমুখি করার পরিকল্পনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ২০১৯-এর পরে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের সামনাসামনি বৈঠক হবে। ২০২০ সালে কোভিডের কারণে এই বৈঠক হয়নি। ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে (করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার আগে) ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছিল।
২০২১ সালের বৈঠকে স্বাভাবিক ভাবেই আলোচনার মূল বিষয় ছিল কোভিড। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী এ বার আলোচনায় অর্থনীতির উপরে জোর দিতে চাইছেন। দেশকে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি করে তোলার লক্ষ্যে রাজ্যগুলির সহযোগিতা চাইতে পারেন তিনি। রাজ্যগুলির রাজকোষের হাল শোধরাতে আয় বুঝে ব্যয়, খয়রাতি বন্ধ করার উপরেও কেন্দ্রের দিক থেকে জোর দেওয়া নীতি আয়োগেহতে পারে।৭ অগস্টের বৈঠকের প্রস্তুতিতে গত মাসে ধর্মশালায় মুখ্যসচিবদের সম্মেলনেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।
এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী রাজ্যগুলির শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করা, পিএম-গতিশক্তি প্রকল্পে জোর, জাতীয় শিক্ষা নীতির রূপায়ণ, জীবনযাত্রা ও ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের উপরে জোর দিতে পারেন বলেও সরকারি কর্তারা মনে করছেন। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কে কংগ্রেস ও আঞ্চলিক দলগুলি বার বার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করার অভিযোগ তুলেছে। জিএসটি-র ক্ষেত্রেও কেন্দ্র নিজেদের সিদ্ধান্ত রাজ্যগুলির উপরে চাপিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ।
কিছুদিন আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। মমতাও একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনা করে বিজেপিশাসিত রাজ্যকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলেই রাজনৈতিক শিবিরের অভিমত।