ছবি: সংগৃহীত।
সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে বিনায়ক দামোদর সাভরকরের নাম এক বন্ধনীতে এনে ফের বিতর্ক উস্কে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে রবিবার ভিডিয়ো-বৈঠকে শুরুতেই মোদী বলেন, “যে পবিত্র ভূমি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গতি এনেছিল, বীর সাভরকর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো স্বাধীনতার বহু তপস্বীর সঙ্গে যে মাটি জড়িত, সেই পুণ্যস্থানকে আমার প্রণাম।” যা শুনে বিরোধীদের অভিযোগ, ফের ‘প্রকৃত’ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে সাভরকরকে এক মঞ্চে আনার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রথম দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়েই ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওই দ্বীপপুঞ্জের বিখ্যাত সেলুলার জেলে গিয়ে হিন্দু মহাসভার নেতা সাভরকরকে স্মরণ করেছিলেন মোদী। যে কুঠুরিতে সাভরকরকে বন্দি রাখা হয়েছিল, সেখানে তাঁর ছবির সামনে বসে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ছবি টুইট করে লিখেছিলেন, “সেলুলার জেলে যে সমস্ত বরেণ্যরা বন্দি ছিলেন, সাভরকর তাঁদের অন্যতম। তাঁকে বন্দি রাখা কুঠুরিতে গিয়েছিলাম। কারাগারের কঠিন বন্দিত্বও তাঁর মনের শক্তিকে দমাতে পারেনি। জেলে থেকেও স্বাধীন ভারতের কথা বলে ও লিখে গিয়েছেন তিনি।”
আরও পড়ুন: এ বার বল‘রামে’ শরণ, চাষিদের অ্যাকাউন্টে টাকা প্রধানমন্ত্রীর
তখন কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের প্রশ্ন ছিল, “স্বাধীনতা যুদ্ধে সাভরকরের তেমন অবদান কোথায়? তিনি তো বরং মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন। গাঁধী হত্যায় এক সময় অভিযোগের আঙুলও উঠেছে তাঁর দিকে। তবে কি স্বাধীনতার লড়াইয়ে সঙ্ঘ পরিবারের কারও অবদান তেমন নেই বুঝেই সাভরকরকে তুলে ধরার এই মরিয়া চেষ্টা? ঠিক যে ভাবে তাঁরা বিশাল মূর্তি গড়ে কংগ্রেসি নেতা বল্লভভাই পটেলকে নিজেদের করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন?”
শনিবারও ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের দিনের সঙ্গে মিলিয়ে মোদী স্বচ্ছতা শিবিরের উদ্বোধন করতে যাওয়ায় কংগ্রেসের কটাক্ষ, ওই ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সঙ্ঘ নেতাদের নাম জানান মোদী। সেই প্রেক্ষিতে এ দিনই প্রধানমন্ত্রীর সাভরকর স্মরণ তাই বাড়তি তাৎপর্যপূর্ণ। সোমবার আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে দ্রুত গতির নেট পরিষেবা চালুর লক্ষ্যে সমুদ্রের নীচ দিয়ে পাতা অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল-কে সেখানকার মানুষের উদ্দেশে সমর্পণ করতে গিয়ে তিনি ফের সাভরকরের নাম টেনে আনেন কি না, নজর থাকবে সে দিকেও।