ছবি পিটিআই
মধ্যপ্রদেশের ২৮টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হতে পারে খুব তাড়াতাড়ি। যার অধিকাংশই আবার খালি হয়েছে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসার সময়ে তাঁর অনুগামীদের পদত্যাগে। এই আবহে আজ ‘মন কি বাত’-এ রাজমাতা বিজয়া রাজে সিন্ধিয়ার স্মৃতিতে ডুব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিহারে ভোটের আগে তাঁর মুখে শোনা গেল জয়প্রকাশ নারায়ণের প্রসঙ্গও।
রেডিয়ো-অনুষ্ঠানে মোদী বলেন, কিছু দিনের মধ্যে বেশ কয়েকজন বরেণ্য ব্যক্তিত্বকে তাঁদের জন্ম জয়ন্তীতে স্মরণ করবে দেশ। মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী থেকে শুরু করা সেই তালিকাতে রাজমাতার উল্লেখ করেছেন তিনি। বলেছেন, রাজ পরিবারের বিপুল সম্পত্তির অধিকারিণী হওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে দেশের সাধারণ মানুষের সেবায় জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বিজয়া রাজে। স্মৃতি রোমন্থনের রাস্তায় হেঁটে শুনিয়েছেন, মাঝরাতে তাঁর জন্য হলুদ মেশানো দুধ নিয়ে এসেছিলেন রাজমাতা।
মোদীর কথায়, “মুরলীমনোহর জোশীর নেতৃত্বে যখন কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত একতা যাত্রায় শামিল হয়েছিলাম, তখন কড়া ঠান্ডার ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে মাঝরাত পেরিয়ে এক দিন পৌঁছলাম গ্বালিয়রের কাছে শিবপুরীতে। আমরা সবাই খুব ক্লান্ত।…রাত্রি দু’টো নাগাদ স্নান সেরে শুতে যাওয়ার তোড়জোড় করছি, হঠাৎ দরজায় টোকা। খুলে দেখি রাজমাতা!” প্রধানমন্ত্রীর দাবি, যে ভাবে অত ঠান্ডার রাতে রাজমাতা তাঁর এবং অন্যান্য সঙ্গীদের জন্য নিজে হাতে দুধ নিয়ে এসেছিলেন, তা কখনও ভুলবেন না তিনি। অনেকে অবশ্য বলছেন, প্রয়াত বিজয়া রাজে তাঁর সময়ে জনসঙ্ঘ এবং বিজেপির প্রথম সারির নেত্রী ছিলেন ঠিকই। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে এতগুলি আসনে উপনির্বাচন দরজায় কড়া না-নাড়লে, ‘মন কি বাত’-এ এতখানি সময় তিনি রাজমাতার জন্য তুলে রাখতেন কি? রাজ্যের ২৪ টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে কংগ্রেস।
বিহারে ভোটের আগে মোদীর মুখে শোনা গিয়েছে সমাজবাদী নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং পটনায় তাঁর জীবন বাঁচাতে নানাজি দেশমুখের ঝাঁপিয়ে পড়ার আখ্যানও। কৃষি বিলের বিরোধিতায় উত্তপ্ত পঞ্জাব। চাপের মুখে জোট ছেড়েছে শরিক অকালি দল। এই সময়ে ভগৎ সিংহের স্মৃতিচারণাতেও তাঁর আদর্শ ও আত্মত্যাগের কথা শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আমজনতার সঙ্গে সংযোগে বরাবরই এই রেডিয়ো-অনুষ্ঠানকে কৌশলী ভাবে ব্যবহার করেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিনও বাড়িতে গল্প বলা ও শোনার চল ফিরিয়ে আনতে বলার সময়ে নিজেকে যেন পরিবারেরই এক জন হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। আক্ষেপ করেছেন, যৌথ পরিবারের বাঁধুনি আলগা হওয়ায় গল্প শোনানোর লোক কমে যাওয়া নিয়ে।