আসছে লোকসভা ভোট, অঙ্কের হিসাবে কিন্তু বিপদে আছেন মোদী

পাটিগণিতেও একটা বিপরীত ছবি রয়েছে। ২৯টি রাজ্যে মোট বিধায়কের সংখ্যা ৪০১৫। তার মধ্যে বিজেপির বিধায়ক ১৫১০ জন। শতকরা হিসেবে ৩৭.৬ ভাগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৮ ০৪:০৬
Share:

নরেন্দ্র মোদী।

এই মুহূর্তে দেশের ১৫টি রাজ্য শাসন করছেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী। আরও সাতটি রাজ্যে জোট করে তারা ক্ষমতায়। ভারতে আর কখনও কোনও রাজনৈতিক দল গোটা দেশে এত প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। এ নিয়ে প্রকাশ্যেই গর্ব করেছেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

কিন্তু সেই পাটিগণিতেও একটা বিপরীত ছবি রয়েছে। ২৯টি রাজ্যে মোট বিধায়কের সংখ্যা ৪০১৫। তার মধ্যে বিজেপির বিধায়ক ১৫১০ জন। শতকরা হিসেবে ৩৭.৬ ভাগ। আর এনডিএ ধরলে বিধায়ক সংখ্যা ১৮৫৪। শতকরা হিসেবে ৪৬.১ ভাগ। সুতরাং প্রায় ৭৬ শতাংশ রাজ্যে শাসনক্ষমতা দখল করেও বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ তো নয়ই, এমনকি, এনডিএ-ও নয়।

ক’দিন আগেই বিরোধীদের জোট-চিত্রে কার্যত চাঁদের হাট দেখা গিয়েছিল কুমারস্বামীর শপথে। তার পরে দেশ জুড়ে ১৫টি আসনে নির্বাচন ও উপনির্বাচনে বিজেপি পেয়েছে মাত্র দু’টি আসন। চলতি বছরেই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে বিধানসভা ভোট। ওই দু’টি রাজ্য নিয়ে বিজেপিরও চিন্তা রয়েছে। তার উপরে, এবিপি নিউজের সমীক্ষা বলছে, ২০১৪-র মে মাসে মোদীর জনপ্রিয়তা ছিল ৩৭ শতাংশ। এক বছর পরে তা বেড়ে হয় ৪৪ শতাংশ। তার পর থেকেই পতন। এ বছরের গোড়ায় জনপ্রিয়তা নেমে আসে ৩৭ শতাংশে। মে মাসে তা আরও কমে ৩৪ শতাংশ হয়েছে। নোট-বাতিল, তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু, তেলের দাম বৃদ্ধি— এই সব কারণে আমজনতার যে বিরাগ, আগামী এক বছরে প্রধানমন্ত্রী তার কতটা সামাল দিতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় বিজেপির অন্দরেই।

Advertisement

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন

২০১৪-র লোকসভায় বিজেপির আসন ছিল ২৮২টি। একের পর এক উপনির্বাচনে হেরে তাদের আসন সংখ্যা এখন স্পিকারকে বাদ দিয়ে ২৭৩। অর্থাৎ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার (২৭২) চেয়ে মাত্র একটি আসন বেশি। সমীক্ষা বলছে, এখনই লোকসভা ভোট হলে এনডিএ ২৭৪টি আসন পেতে পারে। যার অর্থ, সে ক্ষেত্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে বেশ খানিকটা দূরেই থাকবে বিজেপি। অস্বস্তি আরও আছে। এবিপি নিউজের জনমত সমীক্ষা বলছে, ভোটদাতাদের মধ্যে বাড়ছে বিজেপি-বিরোধী মনোভাব। মতদাতাদের ৪৭ শতাংশই মোদী সরকারের কাজকর্মে তেমন খুশি নন। সন্তুষ্ট মতদাতার পরিমাণ ৩৯ শতাংশ।

এই সমীক্ষার ভিত্তিতে এক বছর পরের ভোটের ভবিষ্যৎ বলে দেওয়া যে সম্ভব নয়, সেটা সকলেই বোঝেন। কিন্তু তার পরেও ভোটদাতাদের প্রবণতার একটা আন্দাজ এই ধরনের সমীক্ষা থেকে পাওয়া যায়। সরকারি ভাবে বিজেপির বক্তব্য, আজ যে সব বিরোধী দল এক ছাতার তলায় আসার তোড়জোড় করছে, গত লোকসভাতেও তারা একজোট হয়ে লড়েছিল। কিন্তু মোদী-ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল খড়কুটোর মতো। তার পরে একের পর এক রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। সরকার পরিচালনায় সাফল্য দেখিয়েছে কেন্দ্রেও। অতএব ২০১৯-এ ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement