ফাইল চিত্র।
ঠিক দু’বছর আগে দেশে প্রথম চিন-ফেরত এক কলেজ ছাত্রীর শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তার দু’বছরের মাথায় আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানালেন, দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ৭৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ করোনা প্রতিষেধকের অন্তত দু’টি ডোজ় পেয়েছেন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে প্রতিষেধকের আওতায় নিয়ে আসায় সহযোগিতার জন্য গোটা দেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
আজ ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে মোদী বলেছেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। এটা খুবই ইতিবাচক বিষয়।’’ এর পাশাপাশি সাড়ে চার কোটিরও বেশি ১৮ বছরের কম বয়সিদের প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় দেওয়া গিয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের ৬০ শতাংশেরও বেশি তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিষেধক পেয়ে গিয়েছে। এর ফলে তারা যে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত হবে তা-ই নয়, নিজেদের পড়াশোনাও অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবে।’’
এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০ দিনের মধ্যে এক কোটিরও বেশি মানুষ ‘প্রিকশন’ (বুস্টার) ডোজ় পেয়েছেন। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে গোটা দেশ যে ভাবে লড়াই করেছে, তাকে দুর্দান্ত সাফল্য বলে চিহ্নিত করে বলেছেন, ‘‘দেশের মানুষ চান, সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা এবং আর্থিক কর্মকাণ্ড যাতে বজায় থাকে।’’
আজ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়াও দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ৭৫ শতাংশের প্রতিষেধক পাওয়ার বিষয়টি টুইট করে জানিয়েছেন।
চিনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত এক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সিমেস্টার শেষে দেশে ফেরার পরে দু’বছর আগে এ দিনেই প্রথম সংক্রমণ মিলেছিল তাঁর শরীরে। ইতিমধ্যে সংক্রমণ পেরিয়েছে চার কোটির গণ্ডি। করোনা প্রতিরোধে বেশ কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হলেও এখনও কোনওটিই অব্যর্থ বলে প্রমাণিত হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসা, প্রতিষেধক এবং কোভিড বিধি মেনে চলা— এখনও চিরাচরিত এই প্রক্রিয়ার উপরেই আস্থা রাখা হচ্ছে।
এ দিকে গত কয়েক দিনের মতো আজও দৈনিক সংক্রমণ সামান্য কমেছে (২ লক্ষ ৩৪ হাজার ২৮১)। অ্যাক্টিভ রোগীও কমছে (১৮ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯৩৭)। তবে সংক্রমণ কমলেও উদ্বেগ বাড়ছে সংক্রমণের হার (পজ়িটিভিটি রেট)-কে ঘিরে।
গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১ শতাংশেরও বেশি সংক্রমণ হার বেড়ে হয়েছে ১৪.৫০ শতাংশ।
বেশ কয়েকটি রাজ্যে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার করে এবং কোভিড পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরেই রাজ্যে স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত ১৪ জানুয়ারি প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করেছিল শিবরাজ সরকার। গত কয়েক দিন ধরেই সমাজমাধ্যমে একটি নির্দেশিকা ছড়িয়ে পড়েছিল। সেখানে বলা হয়, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল ও কলেজ খুলে দেওয়া হবে ওড়িশায়। যদিও আজ উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়, ওই নোটিসটি ভুয়ো। এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি রাজ্য সরকার। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে দেশের মধ্যে এখনও প্রথম কেরল। কালকের পরে আজও সেখানে দৈনিক সংক্রমণ পেরিয়েছে ৫০ হাজারের গণ্ডি। সংক্রমণ হার ৪৯.৮৯ শতাংশ! গত রবিবারের মতো আজও লকডাউন ছিল।