কার্গিল দিবসের অনুষ্ঠানে বিজেপি সদর দফতরে সভাপতি জেপি নড্ডা। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
লাদাখ থেকে চিনা সেনা এখনও সরেনি। এর মধ্যে কার্গিল দিবসকে সামনে রেখে ফের পাকিস্তানকে আক্রমণ করে দেশপ্রেম উস্কে দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ঘটনাচক্রে আজ কার্গিল দিবস ও ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান এক দিনে হওয়ায় এ নিয়ে বলার সুযোগ ছাড়েননি মোদী। প্রধানমন্ত্রী যেমন ভারতীয় সেনার বীরত্বের কাহিনীকে তুলে ধরেছেন তেমনই পাক হানাদারদের হামলার প্রশ্নে ইসলামাবাদের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। দু’দেশের সম্পর্ক ঝালাইয়ের চেষ্টার মধ্যেই পাকিস্তান কার্গিল দখল করে ভারতের পিঠে ছুরি বসাতে চেয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
আজ কার্গিল জয়ের ২১তম বার্ষিকীতে মোদী বলেন, অভ্যন্তরীণ গন্ডগোল ধামাচাপা দিতেই পাকিস্তান সেই সময়ে ওই হামলার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, চিন যে লাদাখে ভারতের জমি দখল করে বসে আছে, সেই প্রশ্নে কেন নীরব তিনি। কেন এ পর্যন্ত এক বারও চিনের নাম নেননি তিনি। কেন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পরেও সরাসরি চিনের নিন্দা করা হচ্ছে না?
আরও পড়ুন: ‘আত্মনির্ভর’ ভারত দেখালেন মোদী
অথচ ভারতীয় সেনার বীরত্ব প্রসঙ্গেই বলতে গিয়ে এ দিন মোদী বলেন, ‘‘পাক হানাদারেরা পাহাড়ের উপরে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। আমাদের সেনা ছিল নীচে। কিন্তু কার্গিলের লড়াই প্রমাণ করেছিল, উচ্চতাজনিত সুবিধাজনক অবস্থান নয়, যুদ্ধে জয়-পরাজয় ঠিক করে দেয় সেনার মানসিকতা ও বীরত্ব। সেই সময়ে আহত সেনাদের দেখতে কার্গিল গিয়েছিলেন মোদী। আজ প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের পক্ষ থেকে সেই ছবি প্রকাশও করা হয়।
আরও পড়ুন: লাদাখে চিনা সেনা কি পিছিয়েছে? রইল ধোঁয়াশা
গত তিন মাস ধরে পূর্ব লাদাখে ভারতের জমি দখল করে বসে রয়েছে চিনা সেনা। অনুপ্রবেশকারীদের কড়া বার্তা দেওয়ার কথা বললেও, চিনের নাম এক বারও মুখে নেননি মোদী। তবে আজকের বক্তব্যে একাধিক বার পাকিস্তানের নাম নিতে ভোলেননি তিনি। ইসলামাবাদের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে মোদী বলেন, সেই সময়ে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু দুষ্ট প্রকৃতির লোক বিনা কারণে সকলের সঙ্গে ঝামেলা বাধায়। যারা তাদের ভাল করতে চায় তাদেরই ক্ষতি করে। সেই কারণে ভারতের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টায় পাকিস্তান পিছন থেকে ছুরি মেরেছিল। কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, কার্গিলে পাকিস্তান যা করেছিল তা অন্যায়। এখন লাদাখ সীমান্তে চিনও সেই একই অন্যায় করে চলেছে। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, এ ক্ষেত্রে কেন নরম ভারত? কংগ্রেসের প্রশ্ন, কেন অনুপ্রবেশকারীদের যোগ্য জবাব দেওয়া হচ্ছে না? রাহুল গাঁধীদের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ চিন বলেই ভয়ে তাদের নাম নিচ্ছেন না মোদী। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘কত দিনে অধিকৃত জমি চিন ফেরত দেবে, তা স্পষ্ট করে জানান প্রধানমন্ত্রী।’’