হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।পিটিআই
দ্বিতীয় দফার বিজেপি সরকারের প্রথম ১০০ দিনকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘বিকাশ, বিশ্বাস এবং পরিবর্তনের’ যাত্রা বলে বর্ণনা করলেন। শুধু তাই নয়, ওই ১০০ দিনে সংসদে যা কাজকর্ম হয়েছে তাকে তিনি এগিয়ে রাখলেন গত ৬০ বছরের সংসদীয় কাজকর্মের থেকে। দ্বিতীয় ইনিংসের প্রশংসায় তাঁর মুখে এল ইসরো প্রসঙ্গও। ভারতের চন্দ্রাভিযান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইসরোর চন্দ্রযান-২ অভিযান গোটা দেশকে জুড়ে দিয়েছে এক লহমায়।’’
হরিয়ানার রোহতকে বিজেপি সরকারের ১০০ দিন উপলক্ষে আয়োজিত এক বিরাট জনসভায় এ দিন প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন। সেখান থেকেই তাঁর স্পষ্ট দাবি, প্রথম ১০০ দিনে এমন কিছু সাহসী পদক্ষেপ করেছে তাঁর সরকার, যা আগামী দিনগুলিতে ফলপ্রসূ হবে। ঠিক কোন কোন পদক্ষেপগুলির কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী?
তাঁর দাবি, জম্মু কাশ্মীর সমস্যা হোক বা জল সঙ্কট, ১৩০ কোটি দেশবাসী এতদিনে সুষ্ঠু সমাধানের ইঙ্গিত পেয়েছে। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, তাঁর অন্যতম সহযোগী কেন্দ্রায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-ও এদিন ১০০ দিনের যাত্রাকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন। টুইটারে তিনি লিখেছেন,‘‘মোদীর সরকার জাতীয় সুরক্ষা, বিকাশ ও দরিদ্রের উন্নয়নের সমার্থক।’’ অন্য একটি টুইটারে তিনি প্রশংসা করেছেন তিন তালাক বিল ও কাশ্মীর পুনর্গঠন বিলের। প্রথম ১০০ দিনে পর্যাপ্ত সংখ্যাক বিল পাশের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে সংসদের কর্মতৎপরতার স্তুতি শোনা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর মুখে। সংসদের দুই কক্ষের তৎপরতাকে তিনি গত ষাট বছরের তুলনায় এগিয়ে রাখতে চাইছেন।
অমিত শাহর টুইট:
চলতি বছরের ২৩ মে ক্ষমতায় আসার পরেই মোদী সরকার বেশ কিছু বিল সংসদে পাশ করিয়েছে সরকার। তার মধ্যে প্রধান কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করার সিদ্ধান্ত। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে দিয়ে তাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার সিদ্ধান্ত শুধু দেশের মানুষই নয়, দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চেরও। প্রশাসন বহু সমলোচনার সম্মুখীন হয়েও অনড় থেকেছে নিজের সিদ্ধান্তে। জানিয়েছে কাশ্মীরে উন্নয়নের জন্যে্ এই সিদ্ধান্ত। বিরোধীরা ৩৭০ ধারা রদের জন্যে কাশ্মীরি নেতাদের আটক করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করেছে। অন্য দিকে বার বার খবরের শিরোনাম হয়েছে, গণপিটুনির মতো ঘটনাও।
আরও পড়ুন:নৌকো বেয়ে, ঘন জঙ্গলঘেরা বিপদসঙ্কুল পাহাড়ি পথে দু’ ঘণ্টা হেঁটে পড়াতে যান স্কুলশিক্ষিকা
আরও পড়ুন:ইসরো প্রধানের কান্না নিয়ে বিভাজন সোশাল মিডিয়ায়
সরকার নিজের কাজের যতই স্তুতি করুক না কেন, কেন্দ্রের একশো দিনের কাজ নিয়ে তরজায় মেতেছে বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রীর‘বিকাশ, বিশ্বাস এবং পরিবর্তন’-এর স্লোগানকে ব্যঙ্গ করে কংগ্রেস টুইটরে লিখেছে, ‘এটি আসলে পীড়ন, কোলাহল ও অরাজকতার সরকার’। একের পর এক টুইটে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
কংগ্রেসর টুইট:
কংগ্রেসের প্রশ্ন, আটটি ক্ষেত্রে জিডিপি ২ শতাংশের নীচে নেমে গেলেও অর্থমন্ত্রী কেন মন্দার কথা ঘোষণা করছেন না? প্রতিটি টুইটে কংগ্রেস হ্যাশট্যাগে লিখেছে,‘১০০ দিন নো বিকাশ’।গাড়ি শিল্পের মন্দার বিষয়টিও এসেছে কংগ্রেসের বিরোধিতায়।
দেখুন রাহুল গাধীর টুইট:
গোরক্ষকদের আস্ফালন, দেশজুড়ে বাড়তে থাকা বেকারত্ব, ইউএপিএ এবং কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল—১০০ দিনের মাথায় এই চার অস্ত্রকেই হাতিয়ার করেই আপাতত এগোচ্ছে কংগ্রেস। এ দিন মোদী সরকারের দ্বিতীয় দফতরের কার্যকলাপকে খোঁচা দিয়েছেন রাহুল গাঁধীও। তাঁর মত, এই সরকার দিশাহীন, নেতৃত্বহীন। রাহুল আরও মনে করেন, গণতন্ত্রের আবহকে নষ্ট করছে এই সরকার।