Narendra Modi

Modi in UP: উন্নয়নের জন্য উত্তরপ্রদেশে জেতা দরকার, প্রচারে মোদী

জৌনপুরে এক নির্বাচনী সভায় তিনি জানিয়ে দেন, দেশের বৃহত্তম রাজ্যে বিজেপি যে প্রায় সরকার গড়েই ফেলেছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তিনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বারাণসী শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২২ ০৭:২৩
Share:

ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা ভারতীয় পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার বারাণসীতে।

উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের এক এক পর্যায়ে এক এক তাস খেলে প্রচার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

কখনও চড়া দাগের হিন্দুত্ব, কখনও ভোটের ময়দানে পরিবারতন্ত্রকে নিশানা করতে গিয়ে নিজের মা-কে টেনে আনা, কখনও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে উত্তরপ্রদেশে ‘শক্তিশালী’ সরকার গড়তে বিজেপিকে জেতানো দরকার — ভোটারদের মন জিততে সব রকম তাসই খেলে চলেছেন মোদী। উন্নয়ন, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো বিষয় নিয়ে অবশ্য প্রচারে মুখই খোলেননি তিনি। অবশেষে রাজ্যে ষষ্ঠ পর্যায়ের ভোটের দিন প্রচারে বেরিয়ে তাঁর দাবি, উত্তরপ্রদেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বিজেপির ফের ক্ষমতায় ফেরা দরকার। একই সঙ্গে জৌনপুরে এক নির্বাচনী সভায় তিনি জানিয়ে দেন, দেশের বৃহত্তম রাজ্যে বিজেপি যে প্রায় সরকার গড়েই ফেলেছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তিনি।

মোদী ‘নিশ্চিত’ হলেও উত্তরপ্রদেশ নিয়ে বিজেপির একাংশের ধন্দ কিন্তু কাটছে না। তাঁদের বক্তব্য, যোগী-মোদীর শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে নানা স্তরে। বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো বিষয় ছাড়াও দলিত ও মহিলাদের উপরে নির্যাতন, করোনাকালে গঙ্গায় ভেয়ে যাওয়া মৃতদেহের মতো বিষয় উদ্বেগে রাখছে বিজেপি নেতাদের। ভোটের শেষ পর্যায়ে টানা তিন দিন ধরে মোদীর বারাণসী আঁকড়ে পড়ে থাকা তারই প্রমাণ বলে মনে করছেন বিজেপির বহু নেতা।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশে উন্নয়নের যে অগ্রগতি শুরু হয়েছে, তাকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই বিজেপির জেতা দরকার বলে মোদীর দাবি উড়িয়ে দিয়েছে দুই প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ,
মোদী-যোগীর ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের আমলে স্বাস্থ্য থেকে শিক্ষা থেকে কর্মসংস্থান— উন্নয়নের সবক’টি মাপকাঠিতে দেশের সব চেয়ে পিছিয়ে পড়া রাজ্যের তালিকায় ঠাঁই হয়েছে উত্তরপ্রদেশের। মোদী-যোগীর আমলে রাজ্য পিছন দিকে এগিয়ে গেছে বলে একাধিক বার কটাক্ষ করেছেন বিরোধী নেতারা। মোদীর এ দিনের দাবির পরে বিরোধীদের প্রশ্ন, পিছন দিকে এগিয়ে যাওয়াকেই কি উন্নয়ন বলে মানেন প্রধানমন্ত্রী? সেই সঙ্গেই বিরোধী শিবির মনে করিয়ে দিচ্ছে, মোদী জমানায় ভারত অর্থনীতি থেকে বেকারত্ব থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক— সব ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে পিছিয়েছে। একই অবস্থা হয়েছে বিজেপি-শাসিত অন্য রাজ্যগুলিরও। সেই অবস্থা থেকে দেশের বৃহত্তম রাজ্যকে তুলে আনতে হলে বিজেপিকে হারাতেই হবে বলে প্রচারে বলছেন বিরোধীরা।

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের আবহে ইউক্রনে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধার নিয়েও ভোটের ময়দানে রাজনীতি করতে ছাড়েননি মোদী। গত কালই প্রচারে তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর আমলে ভারতের ক্ষমতা বেড়েছে বলেই ইউক্রেন থেকে ভারতীয় পড়ুয়া ও নাগরিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে। যে দাবি উড়িয়ে বিরোধীরা তো বটেই, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে কূটনীতিক বা সেনা অফিসার সকলেই এক বাক্যে বলছেন, এর আগে উপসাগরীয় যুদ্ধ-সহ একাধিক যুদ্ধের সময় বিদেশ থেকে কয়েক হাজার ভারতীয়কে নিরাপদেই দেশে ফেরানো হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে এ ভাবে প্রচার কোনও সরকার করেনি। তা ছাড়া, আটকে পড়া ছাত্রদের থেকেও মোদীর কাছে ভোটের প্রচার যে বেশি জরুরি, তা এই আবহেও তাঁর ঘনঘন উত্তরপ্রদেশ সফর থেকেই স্পষ্ট। ঘটনাচক্রে এ দিন প্রচারের ফাঁকে ইউক্রেন থেকে ফেরা পড়ুয়াদের সঙ্গে বারাণসীতে কথা বলেন মোদী। তা নিয়ে বিজেপি ও সরকার প্রচারে নামতেই সরব হন বিরোধীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement