পশুপতিকুমার পারস ছবি সংগৃহীত।
রাজনৈতিক অস্বস্তি বেড়েই চলেছে লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)-র নেতা তথা প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগ পাসোয়ানের। এ বার সেই অস্বস্তি আরও কয়েকগুণ বাড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এলজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চিরাগের প্রতিপক্ষ তথা তাঁর কাকা পশুপতিকুমার পারসকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তা নিয়ে অবশ্য নিজের ক্ষোভ গোপন করেননি চিরাগ। রামবিলাস-পুত্র জানিয়েছেন, পশুপতিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করায় তাঁর ‘তীব্র আপত্তি’ রয়েছে। চিরাগকে যে তিনি ছেড়ে কথা বলবেন না তা মন্ত্রী হওয়ার পর পরিষ্কার করে দিয়েছেন পশুপতি।
এলজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বেশ কিছু দিন ধরে কোণঠাসা চিরাগ। দিন দুয়েক ধরে তিনি বুঝতে পারছিলেন পশুপতিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় শামিল করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পশুপতিকে ডেকে পাঠানোর পরে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। আজ তাঁকে মন্ত্রী করার পরে চিরাগের টুইট, ‘দলে বিদ্রোহ করা ও শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগে ইতিমধ্যেই পশুপতি পারসকে এলজেপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় শামিল করায় দল তীব্র আপত্তি জানাচ্ছে’। একইসঙ্গে চিরাগের টুইট, ‘কোনও ব্যক্তিকে মন্ত্রিসভার সদস্য করা তা একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। সেই অধিকারকে সম্মান করি। কিন্তু এলজেপির প্রশ্নই যদি ওঠে, তা হলে বলব, পশুপতি দল থেকে বহিষ্কৃত। তিনি যদি তাঁর গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন তা হলে এর সঙ্গে এলজেপির কোনও সম্পর্ক নেই’।
মন্ত্রী হওয়ার পরে চিরাগকে নিশানা করেছেন পশুপতি। তাঁর দাবি তিনিই এলজেপির জাতীয় চেয়ারপার্সন। পশুপতি বলেন, ‘‘দাদা রামবিলাস পাসোয়ান আমার কাছে ভগবান। আমি দলীয় সংগঠন ও মন্ত্রিত্ব— দুই-ই একসঙ্গে সামলাতে পারব।’’ তাঁর গোষ্ঠীকে ইতিমধ্যেই লোকসভার অধ্যক্ষ এলজেপি হিসেবে মান্যতা দিয়েছেন। আজ এ প্রসঙ্গে চিরাগের টুইট, ‘লোকসভার অধ্যক্ষ পশুপতি পারসকে এলজেপির নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করা হয়েছে’। তা নিয়ে পশুপতির পাল্টা, ‘‘জনগণেরর আদালত, দেশের আদালত ও ঈশ্বরের আদালত—চিরাগের সঙ্গে যে কোনও জায়গায় লড়াইয়ের জন্য তৈরি। ও দলের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে।’’
সম্প্রতি চিরাগ জানিয়েছিলেন, পশুপতি গোষ্ঠীর কাউকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করলে তাঁর আপত্তি আছে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, আমার রাম (মোদী) তাঁর হনুমানকে (চিরাগ) খুন হতে দেখবেন না।’’ পশুপতিকে মন্ত্রী করার পরে চিরাগের প্রতিক্রিয়া নিয়ে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চার মুখপাত্র দানিশ রিজওয়ানের কটাক্ষ, ‘‘এই প্রথম দেখলাম রামের সিদ্ধান্ত নিয়ে হনুমান প্রশ্ন তুলছে! এ কেমন হনুমান!’’