৮২তম ‘অল ইন্ডিয়া প্রিসাইডিং অফিসার্স কনফারেন্স’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
গোটা দেশের একতা ও অখণ্ডতা রক্ষার ক্ষেত্রে কোথাও কোনও অসঙ্গতি দেখা গেলে, তা নজরে রাখার দায়িত্ব আইনসভার। আজ ৮২তম ‘অল ইন্ডিয়া প্রিসাইডিং অফিসার্স কনফারেন্স’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেই বার্তাই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনা অতিমারির জন্য স্পিকারদের এই সম্মেলনে আজ সকালে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের একতাই গোটা দেশের বৈচিত্রকে রক্ষা করে চলেছে।’’
আগামী ২৫ বছর নিজের নিজের দায়িত্ব পালন করাই প্রতিটি ভারতবাসীর জীবনের একমাত্র মন্ত্র হওয়া উচিত বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। ২৫ বছর পরে স্বাধীনতার শতবর্ষ উদ্যাপন করবেন গোটা দেশের মানুষ। সে জন্য এখন থেকেই দেশবাসীকে প্রস্তুতি নিতে হবে বলে জানান মোদী। একই সঙ্গে সংসদ ও বিধানসভাগুলিতে আলাদা করে সময় বার করে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও বিতর্কসভা আয়োজন করার উপরেও জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সব রাজনৈতিক দল তাতে যেন অংশ নেয়, এমনটাই চান প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সময়ে সাংসদ বা বিধায়কদের হইচইয়ে অধিবেশনের কাজ ব্যাহত হওয়া বা কখনও কখনও গোটা অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার ঘটনা নিয়েও আজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, আইনসভার সদস্যদের ব্যবহার ভারতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে মানানসই হওয়া প্রয়োজন। মোদী বলেছেন, ‘‘গণতন্ত্র ভারতে কোনও ব্যবস্থা নয়, এটা গোটা দেশের মূল ভাবধারা।’’
প্রধানমন্ত্রীর সুরে আজ সুর মিলিয়েছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাও। স্পিকার সম্মেলন উপলক্ষে হিমাচল প্রদেশের বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন ওম। সেখানেই সংসদে অধিবেশনের সংখ্যা কমে যাওয়া বা বিনা আলোচনায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন লোকসভার স্পিকার। তাঁর মতে, লোকসভা হোক বা কোনও রাজ্যের বিধানসভা, গুরুত্বপূর্ণ কোনও বিল পাশের ক্ষেত্রে সব কটা রাজনৈতিক দলের আলোচনায় অংশগ্রহণ করাটা খুবই জরুরি। সংসদ বা বিধানসভাগুলি চালানোর জন্য দেশে একটি অভিন্ন আইন প্রক্রিয়া চালুর পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। ওমের কথায়, ‘‘দিনে দিনে আইনসভায় বৈঠকের সংখ্যা কমে যাওয়া বা কোনও বিল নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়ে যাওয়া খুবই উদ্বেগের বিষয়।’’
অনেকেই যদিও লোকসভা স্পিকারের এই উদ্বেগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ, বিরোধীরা বারবার অভিযোগ করেছেন সংসদে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই কার্যত সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল থেকে শুরু করে বিতর্কিত তিন কৃষি বিল পাশ করিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।