ছবি: রয়টার্স।
পশ্চিমি ঝঞ্ঝার কারণে ধোঁয়াশার চাদর রাজধানীর আকাশ থেকে অনেকটা সরে গেলেও, বায়ুর গুণগত মানের বিশেষ উন্নতি হয়নি বলেই জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। আজ বিকেল চারটে নাগাদ দিল্লিতে বায়ুর গুণগত সূচক ছিল ৪০৭। যা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অন্তত চার গুণ ক্ষতিকারক। এ দিকে বিদেশ থেকে ফিরেই আজ উত্তর ভারতের দূষণ ও পশ্চিম ভারতের ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দূষণ রুখতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপগুলি নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
আজ জাতীয় পরিবেশ আদালতে দিল্লি তথা উত্তর ভারতের সামগ্রিক বায়ুদূষণ নিয়ে শুনানি ছিল। তাতে দিল্লি সরকারের মুখ্যসচিব জানান, দূষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক পদক্ষেপের মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে নির্মাণ কাজও। যা শুনে পরিবেশ আদালত জানায়, ওই সিদ্ধান্তের ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে শ্রমিকদের। তাঁদের রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই যে ক’দিন কাজ বন্ধ থাকবে সেই সব দিন ওই শ্রমিকদের রোজকার ভাতা দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দেয় আদালত। শুনানিতে আদালত জানিয়েছে, এই মুহূর্তে জনকল্যাণ তহবিলে বড় মাপের অর্থ পড়ে রয়েছে। সেই অর্থ ওই শ্রমিকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। আজ সুপ্রিম কোর্টেও দিল্লি ও সংলগ্ন রাজ্যগুলির বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে একটি নতুন মামলা দায়ের হয়। মামলাটি কাল বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও দীপক গুপ্তের বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন প্রাক্তন ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘বায়ুদূষণ শিশুদের জন্যই শুধু নয়, সকলের জন্যই ক্ষতিকর। এর ফলে গড় আয়ু প্রায় দশ বছর কমে যায়। আমি আশা করব প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নজর দেবেন।’’
আরও পড়ুন: রাজ্যকে না-জানিয়ে অফিসার নিল কমিশন
আন্দোলন: বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ইন্ডিয়া গেটের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে এক প্রতিবাদী। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: রয়টার্স।
আজ প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে কী ভাবে বায়ুদূষণ রোখা যায় তা ঠিক করতে একটি কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ওই কমিটির শীর্ষে রয়েছেন নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার। দু’সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট জমা দেবে ওই কমিটি।
তবে এরই মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে মৌসম ভবন। তারা জানিয়েছে, পশ্চিম উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মাহা ও পশ্চিমি ঝঞ্জার কারণে কাল-পরশু রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লিতে বৃষ্টিপাত ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিবেশবিদদের মতে, একবার বৃষ্টি হলেই বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর কণাগুলি ভূপৃষ্ঠে নেমে আসবে। তা হলে বাতাসের গুণগত মানের উন্নতি হবে।
এ দিকে আজ ছিল দিল্লিতে জোড়-বিজোড় নীতির দ্বিতীয় দিন। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া দাবি করেন, ‘‘দিল্লির লোকেরা জোড়-বিজোড় নীতি মেনেই পথে নামছেন।’’ যদিও আজ বেলা দু’টো পর্যন্ত গোটা দিল্লিতে জোড়-বিজোড় না মানার ৩৮৪টি ঘটনা সামনে এসেছে। গতকাল ওই সংখ্যাটি ছিল ২৭১।