প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলন থেকে ফিরে আসার পরই করোনা টিকাকরণের গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, সরকারের নতুন স্লোগান এখন ‘হর ঘর টিকা, ঘর ঘর টিকা’।
দেশের যে জেলাগুলিতে করোনা টিকাকরণের হার কম, বুধবার সেই সব জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলির অন্তর্গত চল্লিশটি জেলার জেলাশাসক ছাড়াও এই ভিডিয়ো বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে, তামিলনাড়ুর এম কে স্ট্যালিন, অসমের হিমন্ত বিশ্বকর্মার মতো ১১টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক এবং মুখ্যমন্ত্রীদের প্রতি মোদীর বক্তব্য, “এখনও পর্যন্ত আপনারা মানুষকে টিকাকরণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে গিয়েছেন। এখন সময় এসেছে প্রতিটি ঘরে পৌঁছনোর। হর ঘর টিকা, ঘর ঘর টিকা-ই হবে এখন আমাদের স্লোগান।”
বৈঠকে উপস্থিত সকলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, প্রতিষেধককে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে নিয়ে যেতে হবে। টিকাকরণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নতুন উপায় উদ্ভাবন করতে হবে। তাঁর কথায়, “একদিনে আড়াই কোটি করোনা টিকা দিয়ে আমরা পুরো বিশ্বকে আমদের ক্ষমতা দেখিয়েছি। ইতিমধ্যেই ১০০ কোটি করোনা টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে দেশ। এর পরেও কোনও ঢিলেমির জায়গা নেই। আমাদের লক্ষ্য, দেশের সকলকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া। ঢিলেমি হলে বড় বিপদ আসার প্রবল সম্ভাবনা। বড় ধাক্কা আমাদের মতো বিশাল জনসংখ্যার দেশ সামলাতে পারবে না।”
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ভ্যাটিকান সিটিতে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। সে কথা উল্লেখ করে মোদীর বক্তব্য, ধর্মগুরুরা যাতে টিকাকরণ সম্পর্কে সচেতনতা প্রচার করেন, সে দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। টিকাকরণের গতি বাড়াতে বেশ কিছু পন্থার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “জেলা প্রতি ভিন্ন নীতি হবে। ধর্মগুরুদের কথা মানুষ শোনে, তাঁদের দিয়ে টিকাকরণের পক্ষে ছোট ছোট ভিডিয়ো বানিয়ে এলাকায় ছড়িয়ে দিতে হবে। মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী ও মহিলা পুলিশ কর্মীরা এই অতিমারির সময়ে যত্ন নিয়ে কাজ করেছেন। যে সব এলাকায় টিকাকরণের হার কম, সেখানে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠানো হোক। টিকাকরণের হার বাড়বে।’’
আদিবাসীদের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন, ‘‘সামনেই বিরসা মুন্ডার জন্মদিন। আপনারা প্রচার করুন, এই বছর আমরা তাঁর জন্মদিনে করোনা টিকা নিয়ে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করব। এতে আদিবাসী সমাজের অনেকেই টিকা নিতে আগ্রহী হবেন।’’
সরকারের ‘হর ঘর দস্তক’ প্রকল্পের কথাও এ দিন বলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বাড়ি বাড়ি টিকা দিতে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের মাথায় রাখতে হবে, প্রথম ডোজ়ের পাশাপাশি দ্বিতীয় ডোজ়ও সমান ভাবে দিতে হবে।’’