কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ছবি পিটিআই।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন, কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলার টাকা জোগাড় করতে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে কোনও শর্ত ছাড়াই বেশি করে ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিক। এখন যে সব রাজ্য জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটাতে কেন্দ্রের কথা মতো ঋণ নিতে রাজি হয়েছে, তাদেরই নিঃশর্তে আরও বেশি ঋণের অনুমতি দিচ্ছে মোদী সরকার।
রাজ্যগুলির মধ্যে এ ভাবে ভেদাভেদ করার জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরল বা কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা মনে করছেন, মোদী সরকার নিজের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা অস্বীকার করছে। মুখে রাজ্যগুলির মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার কথা বলছে। কিন্তু নিজেই রাজ্যগুলির মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করছে।
মঙ্গলবার ২০টি রাজ্যকে ৬৮,৮২৫ কোটি টাকা ঋণের অনুমতি দেওয়ার পরে আজ তামিলনাড়ুকেও অতিরিক্ত ৯,৬২৭ কোটি টাকা ঋণের অনুমতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। একই সঙ্গে জানিয়েছে, জিএসটি থেকে আয়ের অভাব মেটাতে যে ১.১০ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের অনুমতি দেওয়া হবে, এটা তার অতিরিক্ত। কেন্দ্র আগেই রাজ্যের জিডিপি-র ৩%-এর বদলে ৫% ঋণের অনুমতি দিয়েছিল। তার মধ্যে এক দেশ এক রেশন কার্ড, পুরসভায় কর বসানোর মতো চারটি প্রশাসনিক সংস্কারের তিনটি শর্ত পূরণ করলে ০.৫% ঋণের অনুমতি দেওয়ার কথা ছিল। যে সব রাজ্য কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটাতে ধার করতে রাজি হয়েছে, তাদের জন্য ওই শর্ত তুলে নেওয়া হয়। অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গ-কেরল-পঞ্জাব-রাজস্থান-ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্যকে হয় জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাব মানতে হবে, অথবা, মোদী সরকারের কথামতো সংস্কার করতে হবে। তবেই বাড়তি ঋণের অনুমতি মিলবে।
আরও পড়ুন: ‘অনেক মানুষ জমায়েত করলে খুশি হয় ভাইরাস’
আরও পড়ুন: যোগী রাজ্যের গ্রামে কর্মীর খোঁজে প্রিয়ঙ্কা
কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক বলেন, “আমরা বারবার জিএসটি পরিষদে বলেছিলাম, কোনও শর্ত ছাড়া ২ শতাংশ বাড়তি ঋণের অনুমতি দেওয়া হোক। এখন কেন্দ্র একে রাজ্যগুলির মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্য কাজে লাগাচ্ছে। এর পরেও বলছে, ঐকমত্য চায়!” ছত্তীসগঢ়ের রাজস্ব মন্ত্রী টি এস সিংহদেও বলেন, “কেন্দ্র প্রয়োজনের সময়ে রাজ্যগুলিকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আর নিজের সাংবিধানিক ও আইনি দায়িত্বও পালন করছে না।”