জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থেই ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো প্রয়োজন, মত কেন্দ্রের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক প্রচার, ভুয়ো খবর, মানহানিকর পোস্ট এবং জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক কার্যকলাপ রুখতে আইন আনার জন্য আরও তিন মাস সময় চাইল কেন্দ্র।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করে কেন্দ্র জানায়, দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য ‘অকল্পনীয় বিপর্যয়’ বয়ে আনতে পারে ইন্টারনেট। সুতরাং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থেই ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো প্রয়োজন।
এ দিন কেন্দ্রের পেশ করা হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘‘এক দিকে প্রযুক্তির দৌলতে যেমন অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে, সামাজিক বিকাশ হচ্ছে। তার পাশাপাশি বিদ্বেষমূলক বার্তা, ভুয়ো খবর এবং দেশদ্রোহী কাজকর্মেরও রমরমা বাড়ছে।’’ বৈদ্যুতিন এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের পক্ষে আইনজীবী রজত নায়ার হলফনামাটি পেশ করেন। বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ তা গ্রহণ করে।
সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার যোগের প্রস্তাব সংক্রান্ত তিনটি পৃথক হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলা এক জায়গায় আনার জন্য আবেদন করেছিল ফেসবুক। তার প্রেক্ষিতেই হলফনামা দিয়েছে কেন্দ্র। জানিয়েছে, ‘তথ্যপ্রযুক্তিতে অন্তর্বর্তী সংস্থাগুলির জন্য নির্দেশিকা (সংশোধনী) বিধি ২০১৮’ চূড়ান্ত করতে আরও তিন মাস সময় লাগবে।
হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে নেট পরিষেবা ও স্মার্টফোন সস্তা হওয়া এবং পরিষেবার চৌহদ্দি বিস্তৃত হওয়ার কারণে বহু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার আওতায় এসেছেন। রাজ্যসভায় মন্ত্রকের গত বছরের একটি বিবৃতি উল্লেখ করে হলফনামা বলেছে, অন্তর্বর্তী সংস্থাগুলির (অর্থাৎ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারের মতো মঞ্চ) জন্য ২০১১-র নির্দেশিকা পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়র্কে কী প্রকাশিত হচ্ছে, তার দায় যাতে নেটওয়র্কগুলি একেবারে ঝেড়ে ফেলতে না পারে, সে ব্যাপারে তাদের দায়বদ্ধতা বাড়ানোর লক্ষ্যে পদক্ষেপ করা হবে।
তবে এই নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সরকার আদতে বিরোধী স্বরকে স্তব্ধ করার চেষ্টা চালাবে কি না, সে প্রশ্ন নাগরিক সমাজের অনেকে তুলতে শুরু করেছেন। কাশ্মীরে যে ভাবে ইন্টারনেটে কোপ পড়েছে, সে দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন তাঁরা। তাঁরা এও দাবি করছেন, নেট-মাধ্যমে বিদ্বেষ এবং ভুয়ো খবর ছড়ানোর ব্যাপারে বর্তমান শাসক দলের অনুগামীদের তৎপরতা অত্যন্ত বেশি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টও বলেছিল, ইন্টারনেট এক মূর্তিমান বিপদ হিসেবে উঠে আসছে। তা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র কী করছে, তা তিন সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলেছিল আদালত। আজ কেন্দ্র আরও তিন মাস সময় চেয়ে নিল।