নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের জমানায় এ বার ‘কোপ পড়তে’ চলেছে বিজ্ঞানে। কেন্দ্রের পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত কয়েকশো বিজ্ঞানচর্চা সংক্রান্ত পুরস্কার এ বার বন্ধ হতে চলেছে। তার বদলে কেন্দ্র চাইছে ভারতরত্ন সম্মাননার ধাঁচে ‘বিজ্ঞানরত্ন’ পুরস্কার চালু করতে।
সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দফতরের সচিব অজয় ভাল্লা গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক করেছেন। সেখানে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের দেওয়া বিজ্ঞান সংক্রান্ত নানা পুরস্কার ও সম্মাননা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বস্তুত, শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার ছাড়া প্রায় সব বিজ্ঞান সংক্রান্ত পুরস্কারের উপর এ বার নামতে চলেছে ‘খাঁড়া’।
কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরেই তাঁরা বিভিন্ন পুরস্কারের মূল্যায়ন করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ভূবিজ্ঞান-সহ বিভিন্ন মন্ত্রক বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণা সংক্রান্ত ৮০১টি পুরস্কার দেয়। কেন্দ্রের নতুন সিদ্ধান্তে তা কমে দাঁড়াতে পারে গোটা ছ’য়েকে।’’ কেন্দ্রের একটি সূত্রের দাবি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া বেশ কিছু পুরস্কারও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে শাহের মন্ত্রকের সচিবের বৈঠকে।
ওই সূত্র জানাচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিভাগের ২১১টি পুরস্কারের ২০৭টি বন্ধ হবে এ বার। পরমাণু শক্তি বিভাগের ৩৮টি পুরস্কারের সবগুলিতেই পড়বে কোপ। মহাকাশ বিজ্ঞান বিভাগেরও তিনটি পুরস্কারই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা বিভাগের সাতটি পুরস্কারের মধ্যে বন্ধ হবে ছ’টি। এ ছাড়া ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের চারটি পুরস্কারের মধ্যে তিনটিকে বাতিলের তালিকায় পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ১৭টির মধ্যে ১৩টি এবং স্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগের ৩৭টির মধ্যে ৩৪টিকে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী-শাহের সরকার। শাহের মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, বিজ্ঞানের একই ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রক ও বিভাগের পৃথক পৃথক পুরস্কার চালু রয়েছে। সে কারণেই এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ যদিও কেন্দ্রের এই যুক্তি মানতে নারাজ বিজ্ঞানীদের অনেকেই। তাঁদের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্তের ফলে বিজ্ঞান গবেষণাক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের মেধার আগমন আরও কমবে।