হল না লক্ষ্যপূরণ
Narendra Modi

Corona vaccination: অর্ধেক টিকা দেওয়া হলেও বাকিটা কবে

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশ জুড়ে টিকাকরণ অভিযান শুরু করেছিল কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

লক্ষ্য ছিল ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের পূর্ণবয়স্ক প্রায় ৯৪ কোটি মানুষকে দু’ডোজ় টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসা। কিন্তু ওই সময়ে কেবল অর্ধেক রাস্তা পেরোল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া আজ সগর্বে ঘোষণা করলেন, দেশের পূর্ণবয়স্কদের অর্ধেককে দু’ডোজ় টিকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাকি অর্ধেকের টিকাকরণ কবে সম্পূর্ণ হবে, তার কোনও দিশা তিনি দেননি।

Advertisement

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশ জুড়ে টিকাকরণ অভিযান শুরু করেছিল কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত কাল সারা দেশে প্রায় ১.০৪ কোটি মানুষ টিকা নিয়েছেন। তার ফলে ভারতের পূর্ণবয়স্ক জনসংখ্যার অর্ধেককে টিকার দু’টি ডোজ়ের আওতায় নিয়ে আসা গিয়েছে। রবিবার রাত পর্যন্ত দেশে দু’টি ডোজ়ের টিকা নিয়েছেন ৪৭.৭৩ কোটি মানুষ। প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৮০.১৩ কোটি, যা দেশের পূর্ণবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ৮৫ শতাংশ। আজ ওই পরিসংখ্যান ছোঁয়ার পরে টুইট করে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান মাণ্ডবিয়া। তিনি লেখেন, ‘‘অভিনন্দন ভারত। দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি মানুষকে দুই ডোজ় দেওয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। ভারতে রোজ টিকাকরণের সংখ্যা বাড়ছে। আজ সকালের মধ্যে দেশে ১২৭.৬১ কোটির বেশি করোনাভাইরাসের প্রতিষেধকের ডোজ় দেওয়া সম্ভব হয়েছে।’’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাফল্য দাবি করলেও দেশের বাকি অর্ধেক সংখ্যক পূর্ণবয়স্ককে কবে দু’ডোজ় টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে, তার কোনও দিশা দেখাতে পারেননি তিনি বা তাঁর মন্ত্রক। দেশে করোনার প্রতিষেধকের জোগান স্বাভাবিক রয়েছে বলে সরকারের দাবি। কিন্তু যে গতিতে টিকাকরণ চলছে, তাতে দেশের বাকি পূর্ণবয়স্ক জনতাকে দুই ডোজ়ের আওতায় নিয়ে আসতে এখনও ন্যূনতম তিন থেকে চার মাস সময় লাগার কথা। করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি ওমিক্রন যখন ভারতে ছড়াতে শুরু করেছে, তখন অর্ধেক সংখ্যক প্রাপ্তবয়স্কের দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকা না থাকাটা এ দেশে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ ডেকে আনতে পারে বলেই আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পাল্টা যুক্তি, দেশের অন্তত দশ কোটির কাছাকাছি মানুষ সময় হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও এখনও দ্বিতীয় ডোজ় নেননি। অনেকেই করোনা চলে গিয়েছে মনে করে দ্বিতীয় ডোজ় নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। নিজেদের এবং অন্তত আশেপাশের লোকেদের কথা ভেবে তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকা নেওয়া উচিত।

Advertisement

ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় বুস্টার ডোজ়ের দাবি তুলছেন চিকিৎসকদের একাংশ। যে স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারেরা একেবারে গোড়ায়, অর্থাৎ জানুয়ারিতে প্রথম ও তার এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়
ডোজ়ের টিকা নিয়েছিলেন, তাঁদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বহু চিকিৎসক বুস্টার ডোজ়ের পক্ষে সওয়াল করছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ২৫ কোটি স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারের অন্তত ছ’মাস আগে কোভিডের টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এঁদের মধ্যে বড় সংখ্যক চিকিৎসকের বয়স পঞ্চাশের বেশি। যেহেতু প্রতিষেধকের মাধ্যমে তৈরি হওয়া রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরে কত দিন সক্রিয় থাকে তা স্পষ্ট নয়, তাই বিশ্বের একাধিক দেশ দ্বিতীয় ডোজ়ের ছ’মাস পরেই বুস্টার ডোজ় নেওয়ায় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।

স্বাস্থ্যকর্মীরা ছাড়াও এ দেশের চল্লিশ বা তার বেশি বয়সি নাগরিকদের বুস্টার ডোজ় দেওয়ার সুপারিশ করেছে জিনোমিক্স কনসর্টিয়াম বা ইনসাকগ। কিন্তু ভারতে যেখানে প্রাপ্তবয়স্কদের অর্ধেকই এখনও টিকা পাননি, সেখানে নতুন করে বুস্টার ডোজ় দেওয়া শুরু করার পক্ষপাতী নয় কেন্দ্র। এই প্রসঙ্গে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল বলেন, সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য হল দেশের সব মানুষকে প্রথমে দু’ডোজ় প্রতিষেধক দেওয়া। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের মতে, বুস্টার ডোজ় বা ছোটদের টিকা দেওয়ার বিষয়টি পরবর্তী সময়ে ভাবা হবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীও করোনা সংক্রান্ত বিতর্কের জবাবে লোকসভায় বলেছেন, বুস্টার ডোজ় নিয়ে সরকার অযথা তাড়াহুড়ো করে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে রাজি নয়। উপযুক্ত বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে বুস্টার ডোজ় ও ছোটদের টিকাকরণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে আগামিকাল ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজ়রি গ্রুপ অন ইমিউনাইজ়েশন (এনটিএজিআই)-এর কোভিড ওয়ার্কিং গ্রুপ আগামিকাল বৈঠকে বসতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement