ছবি: পিটিআই।
চিরকুটে লিখে এনেছিলেন পয়েন্টগুলি। সেটি দেখেই পড়লেন প্রধানমন্ত্রী। লোকসভায় জানালেন, ‘বন্দি’ ওমর আবদুল্লা নাকি এক সময় বলেছিলেন, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হলে কাশ্মীরে ভূমিকম্প হবে।’’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হতেই তন্ন তন্ন করে খোঁজা হল ওমরের ওই ‘বক্তব্য’। সামনে যা এল, তা দেখে বিরোধীদের চক্ষু চড়কগাছ। একটি ওয়েবসাইটে ‘ফেক-নিউজ’ বলেই প্রকাশিত হয়েছিল ওমরের ওই বক্তব্য। আর সেটিকেই ‘সত্যি ধরে নিয়ে’ সংসদে বলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী!
‘ফেক-নিউজ’ অথবা ভুয়ো খবর যে ভাবে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছে, খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতরই তাতে আক্রান্ত। কংগ্রেসের নেতাদের মতে, বোতলের দৈত্যকে বার করে এনে বিজেপি নিজেই বিপাকে পড়ছে। এক কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘‘হাজার-হাজার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে নিত্যদিন হাজারো এমন ভুয়ো খবর ছড়ানোর চল শুরু করেছে খোদ বিজেপিই। ‘হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়’ তাদেরই হাতে তৈরি। এখন তারাই এর কবলে। অনেকটা চিন থেকে শুরু হওয়া করোনাভাইরাসের মতো।’’
ভুয়ো খবরের জাল ছিঁড়তে খোদ প্রধানমন্ত্রী সরকারি স্তর থেকে এর মোকাবিলায় নেমেছেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন, অন্তত সরকারি বিষয়ে যা ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে, তার সত্যতা যাচাই করে মানুষকে অবগত করাতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনে ‘প্রেস ইনফরমেশন বুরো (পিআইবি)’ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভুয়ো খবর প্রচারে রাশ টানতে শুরু করেছে। মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই এক অফিসারকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভাগ, মন্ত্রক ও প্রকল্প সংক্রান্ত কোনও খবরের সত্যতা যাচাই করে জানানো হচ্ছে সকলকে।’’
আরও পড়ুন: আটক ওমর আবদুল্লার নতুন ছবি প্রকাশ্যে
কী ধরনের ভুয়ো খবর এসেছে? মন্ত্রকের এক কর্তা জানালেন, নানা ধরনের। যেমন, দু’হাজারের নোট বন্ধ হয়ে যাবে। ফের আসবে হাজারের নোট। এই খবর ভুল। ‘প্রধানমন্ত্রী কন্যা আশীর্বাদ যোজনা’য় নাকি মেয়েদের দু’হাজার টাকা দেওয়া হবে। মহিলারা পাবেন ফ্রি স্কুটি। ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’-এ নাকি নতুন রেশন কার্ড হবে। আইনজীবীরা নাকি জাতীয় সড়কে টোলে ছাড় পাবেন। এই সব খবরই ভুল।
তথ্য-সত্য বলছে পিআইবি
হোয়াটসঅ্যাপে +৯১৮৭৯৯৭১১২৫৯
ইমেলে pibfactcheck@gmail.com
টুইটারে @PIBFactCheck
কোনও খবরই কি সত্য প্রমাণ হয়নি? মন্ত্রক জানাচ্ছে, হয়েছে। যেমন ৫০০ টাকার নোটে সবুজ স্ট্রিপ গাঁধীর ছবির আরও কাছাকাছি চলে আসছে। অনেকে জাল নোট মনে করছিলেন। দেখা যায়, দু’ধরনের নোটই ঠিক। নোভেল করোনাভাইরাস নিয়ে প্রচার হচ্ছে, উষ্ণ জলে রসুন দিয়ে খেলে নাকি এই রোগ সারে! এমন প্রচারও খণ্ডন করেছে সরকার।
কিন্তু হিন্দু শিবির থেকেই তো ‘গোমূত্র পার্টি’ হচ্ছে করোনা রুখতে! গোবরের খাবার আর গোমূত্র পান। এ কথা এনসিপির এক সাংসদ বন্দনা চহ্বাণ রাজ্যসভায় তুলেছিলেন। ধমক খেয়েছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুর কাছে।