ব্যর্থতা ঝেড়ে কেন্দ্র বিলগ্নিকরণে আগ্রাসী

কিন্তু গত আর্থিক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বেচে টাকা ঘরে তুলতে রীতিমতো কালঘাম ছুটেছে কেন্দ্রের। বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়েও এয়ার ইন্ডিয়ার বিলগ্নিকরণ সম্ভব হয়নি।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ অধিকারী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০২:০৯
Share:

ছবি: পিটিআই।

একেবারেই মারকাটারি নয়। নিখাদ অঙ্কের হিসেবে চলতি অর্থবর্ষে বিলগ্নিকরণ থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ৮০ হাজার কোটি টাকা (সংশোধিত হিসেব) থেকে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি। কিন্তু বাজেটে স্পষ্ট, নরেন্দ্র মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসে বিলগ্নিকরণের উৎসাহ ও উদ্যোগকে শুধু ওই সংখ্যার দাঁড়িপাল্লায় মাপা ঠিক হবে না। কারণ, আয় বাড়াতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। এই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বেচে টাকা জোগাড়ে কেন্দ্র মরিয়া। বিলগ্নিকরণকে নীতি হিসেবে অগ্রাধিকার দিতে মোদীর সরকার অনেক বেশি আন্তরিক।

Advertisement

কিন্তু গত আর্থিক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বেচে টাকা ঘরে তুলতে রীতিমতো কালঘাম ছুটেছে কেন্দ্রের। বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়েও এয়ার ইন্ডিয়ার বিলগ্নিকরণ সম্ভব হয়নি। ওই খাতে যে টাকা হাতে এসেছে, তার একটা বড় অংশেরও উৎস এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কিনে নেওয়া।

তবে অর্থমন্ত্রীর দাবি, সেই ব্যর্থতার বোঝা ঝেড়ে ফেলে এ বার গোড়া থেকেই বিলগ্নিকরণে অনেক বেশি আগ্রাসী হতে চান তাঁরা। এয়ার ইন্ডিয়ার শেয়ার বিক্রিতে নতুন করে কোমর বাঁধার পরিকল্পনা তো রয়েইছে, বন্দোবস্ত করা হচ্ছে যত বেশি সম্ভব সংস্থার শেয়ার বিক্রির।

Advertisement

বিলগ্নিকরণ সচিব অতনু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কৌশলগত বিলগ্নিকরণে কোনও সংস্থা লাভজনক কি না, সেই বাছবিচার করা হবে না।’’ ইঙ্গিত, বিলগ্নিকরণের তালিকায় থাকা যে কোনও সংস্থার জন্যই ভাল ক্রেতা পেলে, তার শেয়ার বিক্রি করতে পিছপা হবে না কেন্দ্র। একই সঙ্গে বাজেটের উল্লেখ করে তিনি জানান, এখন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে অন্তত ৫১ শতাংশ অংশীদারি হাতে রাখে কেন্দ্র। কিন্তু ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্যান্য সংস্থার ক্ষেত্রে তা আদৌ কতটা দরকারি, আগামী দিনে আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিটির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তা ঠিক করা হবে।

শুধু তা-ই নয়, ওই ৫১% অংশীদারির হিসেব করা হবে অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার হাতে থাকা শেয়ারের পরিমাণ ধরে। অর্থাৎ, ‘ক’ সংস্থায় যদি জীবনবিমা নিগম-সহ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ২০ শতাংশ শেয়ার থাকে, তবে নিজেদের হাতে আর ৩১ শতাংশ অংশীদারি রাখাই যথেষ্ট মনে করবে কেন্দ্র। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অনেক বেশি শেয়ার সাধারণ ছোট লগ্নিকারীদের হাতে দেওয়া যাবে বলে দাবি কেন্দ্রের। একই লক্ষ্যে সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অন্তত ২৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ লগ্নিকারীর হাতে থাকা নিশ্চিত করতে চায় তারা।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সংযুক্তিতে ‘সাফল্য’ পাওয়ার পরে সুযোগ থাকলে এ বার ওই একই পথে হেঁটে অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকেও মিশিয়ে দিতে চায় কেন্দ্র। অনেকের মতে, এতে খরচ কমে। আকারে বড় সংস্থা তৈরি হলে অনেক সময়ে সুবিধা হয় কাঁচামালের জন্য দর কষাকষি কিংবা বাজার দখলেও। তবে তার জন্য সংস্থাগুলির একে অন্যের পরিপূরক হওয়া প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement