ফাইল চিত্র।
ইন্টারনেট নির্ভর বিশ্বে আগামী দিনে সব অপরাধকে ছাপিয়ে যাবে সাইবার অপরাধ। তাই আজ জাতীয় পুলিশ অ্যাকাডেমির ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস-এর শিক্ষানবিশদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাইবার নিরাপত্তার প্রশ্নে নিত্যনতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং এ নিয়ে গবেষণার উপরে জোর দেন।
ইজরায়েলের পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক নেতা-সাংবাদিক-সমাজকর্মীদের উপরে নজরদারির অভিযোগ নিয়ে যখন গোটা বিশ্ব তোলপাড় এবং ভারতে বিরোধী পক্ষের কাঠগড়ায় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা, তখন ভাবী আইপিএস-দের অনুষ্ঠানে মোদী মনে করিয়ে দেন, চিরাচরিত অপরাধের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে নিত্যনতুন ভাবে মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন প্রতারকেরা। যত প্রযুক্তি উন্নত হবে, তত আগামী দিনে এ ধরনের জালিয়াতি বাড়বে বলেই আশঙ্কা সাইবার বিশেষজ্ঞদের। এই আবহে আগামী দিনে যারা দেশের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন, সেই শিক্ষানবিশ আইপিএস অফিসারদের প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবর্দা প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেন মোদী। যদিও পেগাসাস বা ওই সম্পর্তিক বিতর্ক নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই নীরব ছিলেন তিনি।
আজ উপস্থিত শিক্ষানবিশ আইপিএস অফিসারদের মধ্যে ছিলেন কোম্মি প্রতাপ শিবকিশোর। আইআইটি খড়্গপুর থেকে এমটেক করা কোম্মিকে নিজের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর্থিক কারচুপি দমনে তাঁর অভিনব চিন্তাভাবনা নিয়ে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। তরুণ শিক্ষানবিশ অফিসারদের ডিজিটাল সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত থাকার পরামর্শ দেন।
মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার গৌরব রামপ্রবেশ রাইয়ের নিয়োগ হয়েছে ছত্তীসগঢ়ে। অবসর সময়ে দাবার বোর্ড হাতে তুলে নেওয়া গৌরব আজ প্রধানমন্ত্রীকে জানান, দাবা তাঁকে বাস্তবের মাটিতে রণকৌশল ঠিক করতেও সাহায্য করে থাকে। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেন, ছত্তীসগঢ়ের মতো মাওবাদী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নেও অগ্রাধিকার দেওয়ার উপরে জোর দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, সরকার মাওবাদী হিংসা কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে ভরসা ও আস্থার নতুন সেতু সংযোগ করতে হবে। দন্ত চিকিৎসক নবজ্যোৎ সিমি যোগ দিতে চলেছেন বিহার ক্যাডারে। চিকিৎসক হিসাবে সংবেদনশীলতার সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি কোনও ভয়ের কাছে তাঁকে মাথা নত না করার পরামর্শ দেন মোদী। তিনি বলেন, বাহিনীতে দেশের মেয়েদের অংশ বাড়লে আখেরে পুলিশ বাহিনীই শক্তিশালী হবে। আজ নিজের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষানবিশ আধিকারিকদের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম ২৫ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। কারণ এই ২৫ বছরে ভারত স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ থেকে শতবর্ষে প্রবেশ করবে। এ নিয়ে বলতে গিয়ে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ১৯৩০-৪৭ সাল পর্যন্ত তরুণ প্রজন্ম স্বরাজের জন্য লড়াই করেছিলেন। বর্তমান যুব সমাজকে সু-রাজ্য প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।