পর পর দু’দিন। কংগ্রেসে সভাপতি পদের নির্বাচন নিয়ে আজ ফের রাহুল গাঁধীকে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গুজরাত ভোটে ‘পৈতেধারী হিন্দু’ রাহুলকে মোকাবিলা করতে শেষ বাজারে মেরুকরণের ভিত চওড়া করতে নামলেন। রাহুলের অভিষেককে বললেন, ‘ঔরঙ্গজেব-রাজ’। যা নিয়ে কংগ্রেসের প্রশ্ন, মোদীর এত ‘রাহুল-আতঙ্ক’ কীসের? নিজের গড় গুজরাত নিয়ে আত্মবিশ্বাস থাকলে কেনই বা বার-বার রাহুল গাঁধীকে বিঁধতে হচ্ছে?’’ কংগ্রেসের মতে, মূল প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে পারছেন না বলেই মোদী কংগ্রেসের অন্দর নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছেন।
দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে রাহুলের মনোনয়ন পেশকে ঘিরে আজ ছিল উৎসবের মেজাজ। এরই মধ্যে ফের মুখ ফস্কে গেল কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারের। গত কালই কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতা শাহজাদ পুণাওয়ালাকে ‘শাবাসি’ দিয়ে রাহুলের অভিষেককে কটাক্ষ করেছিলেন মোদী। তার জবাবেই আজ মণিশঙ্কর বলেন, ‘‘জহাঙ্গিরের পর শাহজাহান, তার পরে ঔরঙ্গজেবের অভিষেকের সময়ে ভোট হয়নি। কংগ্রেসে গণতন্ত্র আছে বলেই ভোট হচ্ছে। শাহজাদের হিম্মত থাকলে ভোটে লড়ুন।’’
দীর্ঘদিন ধরেই পরিবারতন্ত্র নিয়ে গাঁধী পরিবারকে বিঁধে চলছেন মোদী। ভোট বাজারে যখন তাঁর রাজ্যে হিন্দু ভোটে থাবা বসাতে রাহুল তৎপর, তখন পরিবারতন্ত্র নিয়ে অভিযোগকে অতীতের মুসলিম আমলের সঙ্গে জুড়ে নেওয়া সুযোগ ছাড়েননি তিনি। মণিশঙ্করের কথায় ভুল ছিল না কিছু। মোদী অস্ত্র করেন মণিশঙ্করের মন্তব্যেরর শুধু প্রথম অংশটুকুকে। গুজরাতের সব সভায় গুজরাতিতে বললেও, সারা দেশের নজর কাড়তে হিন্দিতে মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেসের নেতাই মানছেন, দলে কেউ ক্ষমতায় আসা মানেই বাদশাহের ছেলের অভিষেক। ঔরঙ্গজেব-রাজ মুবারক।’’
হিন্দুত্বের মুখ যোগী আদিত্যনাথও বলেন, ‘‘গোটা দেশে কংগ্রেস এখন বোঝা। রাহুলের পদোন্নতির পরে এর পুরোপুরি অবসান হবে।’’ যোগীর ইঙ্গিত, রাহুলের যে-হেতু কোনও সন্তান নেই, রাহুলের পরে তাই কংগ্রেসে পরিবারতন্ত্রের শেষ হবে।
মনোনয়নের প্রক্রিয়া চলার সময়ে রাহুল নিজে কংগ্রেস দফতরের বাইরে আসেননি। তবে জনা পঞ্চাশ নেতাকে তিনি একে একে বাইরে পাঠান মোদীর কটাক্ষের জবাব দিতে। এক সুরে তাঁরা বলেন, রাহুলকে ভয় পাচ্ছেন বলেই মোদী যে কোনও অছিলায় বারবার আক্রমণ করছেন রাহুলকে। আসল প্রশ্ন এড়িয়ে মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। বিজেপির অবশ্য বক্তব্য, যুদ্ধে সব চলে। রাহুলও তো নিজেকে ‘পৈতেধারী’ হিন্দু বলে দাবি করে মন্দিরে-মন্দিরে ঘুরছেন। এটাও ভোট-রাজনীতি। বিজেপিও এখন দেখাবে, রাহুল আসলে ঔরঙ্গজেবের মতোই হিন্দু-বিরোধী।