আপ্যায়ন: ভুজের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বরণ করে নিচ্ছেন দলীয় কর্মীরা। ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী কি কাঁদবেন? কোটি টাকার খেলা চলছে এই প্রশ্ন নিয়েই।
গত কাল মোদীর চারটি সভার পরেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে গুজরাতের সাট্টা বাজার। কাল নিজেকে ‘ভূমিপুত্র’ বলে শুধু গুজরাতিতে কথা বলে রাজ্যের মন ছুঁতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাট্টা বাজার বাজি ধরেছে, ভরা সভায় এ বারে যে কোনও মুহূর্তে কেঁদে ফেলতে পারেন মোদী।
হার্দিক পটেলও আজ এই ভবিষ্যদ্বাণীই করেছেন। বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী যে কোনও পর্যায়ে যেতে পারেন। ভোটারদের মন টানতে কেঁদেও ফেলতে পারেন।’’ আগেও একাধিক বার প্রকাশ্যে চোখের জল পড়তে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ক্ষমতায় এসে সংসদের সেন্ট্রাল হলে প্রথম ভাষণেই কেঁদে ফেলেছিলেন। মায়ের কষ্টের কথা বলে কেঁদেছিলেন সিলিকন ভ্যালিতে গিয়ে। নোটবন্দির পর দেশজুড়ে প্রবল আক্রোশের মুখেও জলে ভরা ছিল তাঁর চোখ। তখনই বলেছিলেন, ৫০ দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে চৌমাথায় যে কোনও শাস্তি ভোগে রাজি। গুজরাতের পথে পথে বিরোধীরা এখনও সেই চৌমাথার কথা প্রচারে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন নিরন্তর।
আরও পড়ুন: জবাব চাইতে প্রধানমন্ত্রীকে তাড়া রাহুলের
কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার মতে, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, যাবতীয় সৃষ্টির শুরু তাঁর হাত ধরেই। কিন্তু মিথ্যাচার, ছল-কৌশল করে মানুষকে আর বোকা বানাতে পারবেন না।’’
এমনিতে বিজেপিকে এখনও একশোর বেশি আসনে এগিয়ে রাখছে সাট্টাবাজরা। কিন্তু রাহুল গাঁধীর সভা আর হার্দিক পটেলের সঙ্গে সমঝোতার পর তারাও মনে করছে, লড়াই আর একতরফা নেই।
গুজরাত নিয়ে মোদী যে নিজেও অস্বস্তিতে রয়েছেন, তা এ দিনও স্পষ্ট। আজ সারাদিন হায়দরাবাদ মেট্রোর উদ্বোধন, ইভাঙ্কা ট্রাম্পের সঙ্গে ঠাসা কর্মসূচি। তবু সকালেই ফোন করেছেন ভুজে। রঙিন পেন্সিলে ৮০ বর্গফুট ক্যানভাসে মোদীর ছবি এঁকে পাঠিয়েছেন মনোজ সোনি নামে
এক শিল্পী। সেটি হাতে পেয়ে ‘কৃতজ্ঞতা’ জানাতে শুধু মনোজকে ফোন করে ক্ষান্ত হননি, টুইটেও ফলাও করে জানিয়েছেন।
এই ভুজেই গত কাল সকালে এই পর্বে মোদীর প্রথম সভা ছিল। লোক আসেনি বলে দু’ঘণ্টা দেরি করতে হয়। পরপর চারটি সভা। খুব বেশি অপেক্ষার সুযোগ ছিল না। চেয়ার ভরাতে আর পারেননি মোদী। পরের সভাগুলিতেও কম-বেশি এক হাল!
অথচ এই মোদীর কথা শুনতেই আগে ভিড় উপচে পড়ত। স্থানীয় এক বিজেপি নেতার মতে, প্রথম দুটি সভার হাল দেখে ধারির সভায় আগেই দশ হাজার চেয়ার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তড়িঘড়ি। ৪০ হাজার থেকে ৩০ হাজারে নামানোর পরে হাল দেখে আরও অর্ধেক করা হয়। তাতেও পুরো ভরেনি। অগত্যা আগামিকালের সভার আগে গোড়া থেকেই চেয়ার কমানোর দাওয়াই দেওয়া হয়েছে।