‘মিশন লাইফ’-এর সূচনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার গুজরাতের একতা নগরে। ছবি পিটিআই।
পরিবেশ বিপর্যয়ের মোকাবিলায় জীবনকে মাপসই করে নেওয়ার লক্ষ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসকে পাশে নিয়ে গুজরাতে ‘মিশন লাইফ’-এর সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রশ্নে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পরিবেশ যে ভারতের জন্য অনুকূল নয়, সে কথাও গুতেরেসকে বলতে ভুললেন না।
সূত্রের খবর, আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গুতেরেসের দীর্ঘ বৈঠক হয়। পরে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও পৃথক বৈঠক করেন তাঁর সঙ্গে। সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয় তোলা হয়েছে আলোচনায়। এই একান্ত বৈঠকের সুযোগে প্রথমত এবং প্রধানত নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ চেয়ে ভারতের দীর্ঘমেয়াদি দাবি বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেছেন মোদী।
অতিমারির সময় থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের দাবিতে কার্যত গলা ফাটিয়ে যাচ্ছে ভারত। গত মাসের রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনেও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই নিয়ে সরব হয়েছেন। নয়াদিল্লির দাবি, বর্তমান ভূকৌশলগত পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারতকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া হোক। আজকের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে বলেই খবর। সূত্রের খবর, এর পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদে চিনের ভূমিকার নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ভারত। বলা হয়েছে, বারবার পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে জঙ্গিদের আড়াল করে যাচ্ছে বেজিং। ভারত নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য বলেই এই নিয়ে লড়াইটা সর্বোচ্চ জায়গায় নিয়ে যেতে পারছে না। অথচ সীমান্ত সন্ত্রাসের শিকার হতে হচ্ছে ভারতকেই।
গত কালই লস্কর-ই তইবা-র শাহিদ মামুদকে রাষ্ট্রপুঞ্জের জঙ্গি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব আটকে দিয়েছে চিন। ভারত এবং আমেরিকার আনা প্রস্তাব ছিল এটি। বারবার চার বার এই একই কাজ করল শি জিনপিং-এর সরকার। বিষয়টি নিয়ে ভারত তার ক্ষোভের কথা জানিয়েছে গুতেরেসকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ মহাসচিবও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ভূকৌশলগত মতপার্থক্য। তাঁর বক্তব্য, লস্কর জঙ্গিকে তালিকাভুক্ত না-করতে দেওয়ার পদক্ষেপ একান্তই রাজনৈতিক।