‘প্রথমে আবেদন, ফের নিবেদন… আর তারপর দনাদন।’
ইনদওরের এক পুর আধিকারিককে ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে পেটানোর পরে এই উক্তিটিই নিজের মুখ থেকে বার করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক আকাশ বিজয়বর্গীয়। ব্যাট দিয়ে পেটানোর পরে এখন অনেকেই যাঁকে ‘ব্যাটম্যান’ বলে ডাকেন। তিনিই আবার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের ছেলে। ২৫ বছর আগে আর এক আধিকারিকের দিকে জুতো নিয়ে ধেয়ে যাচ্ছিলেন কৈলাস, সে ছবিও এখন ভাইরাল। আজ কৈলাসের সামনেই দলের সাংসদদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেশ কড়া ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দিলেন। কারও নাম না করেই বললেন, ‘‘এই ধরনের ব্যক্তিদের দলে রাখার কোনও অর্থ নেই। সে ওই ব্যক্তি যাঁরই ছেলে হোন না কেন। এক জন বিধায়ক কম হলে দলের কিছু আসে যায় না।’’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানিয়ে মুখপাত্র রাজীব প্রতাপ রুডি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী খুবই রুষ্ট। তিনি জানিয়েছেন, জনসমক্ষে এমন আচরণ করার অধিকার কারও নেই। এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। শুধু কোনও এক ব্যক্তির উদ্দেশে নয়, দলের সকলের জন্যই এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।’’ দলের এক সাংসদের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই ধরনের লোকদের জন্য তিনি মাথায় ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করছেন না। এই ঘটনার খবর যখন প্রকাশ্যে আসে তখন প্রধানমন্ত্রী বিদেশে ছিলেন। এমন ঘটনায় বিদেশে দল ও দেশের বদনাম হয় বলেও তিনি জানিয়েছেন।’’
প্রধানমন্ত্রীর থেকে কড়া বার্তা পেয়েই বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জে পি নড্ডা ও সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রামলাল বৈঠক করেন। বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আকাশকে কারণ দর্শাও নোটিস পাঠাবে। কিন্তু বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, খোদ প্রধানমন্ত্রী পদক্ষেপের কথা বলার পরে কীসের কারণ-দর্শাও নোটিস? দিগ্বিজয় সিংহ উল্টে মোদীর ‘বুকের পাটা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সাহস থাকলে আকাশকে দল থেকে বের করে দিন না! কে আটকাচ্ছে তাঁদের?’’
যদিও প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরে কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের ঘনিষ্ঠ শিবিরের দাবি, প্রধানমন্ত্রী যে বার্তা দেওয়ার ছিল দিয়েছেন। কারণ-দর্শাও নোটিস এলে তার জবাব দেওয়া হবে। বিরোধীদের অভিযোগ, আসলে প্রধানমন্ত্রীর গোটা বার্তাটিই ফাঁপা। ভোটের সময়ে প্রজ্ঞা ঠাকুরের বিতর্কিত মন্তব্যের পরে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে এক চিলতে পদক্ষেপ হয়নি।
বিজেপির শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য বিজয়া চক্রবর্তী। তিনি আজ সংসদ ভবন চত্বরে বলেন, ‘‘অভিযোগ এলে আমরা দেখি। কিন্তু বৈঠকই হচ্ছে কোথায়?’’