ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ চান রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিন। পরিবর্তে ২০১৯-এর লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও করা হবে। বসুন্ধরা এই প্রস্তাবে মোটেই রাজি নন। প্রস্তাবটির প্রকৃত জনক আরএসএস নেতৃত্ব। এখন তাঁরাও বসুন্ধরাকে বোঝাতে সক্রিয়।
বসুন্ধরা এই প্রস্তাবে রাজি হলে মোদী লোকসভা ও বেশ কিছু রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন এক সঙ্গে করতে পারেন। বিজেপি সূত্র বলছে, এক সঙ্গে করার অর্থ এই নয় যে, ভোট এগিয়ে এনে ডিসেম্বরে করে দেওয়া। বরং রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় এবং মধ্যপ্রদেশে ডিসেম্বরে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ওই রাজ্যগুলিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হবে। এই রাজ্যগুলি বিজেপি শাসিত, তাই ৩৫৬ ধারা নিয়ে আপত্তি উঠবে না। অবিজেপি রাজ্য হলে ঝড় উঠত।
সরকারের পরিকল্পনা হল, মার্চে লোকসভা ও বেশ কিছু রাজ্যের বিধানসভা ভোট একসঙ্গে করা। ফেব্রুয়ারিতে সংক্ষিপ্ত বাজেট অধিবেশনে ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ হয়ে গেলেই নির্বাচন কমিশন ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। ১ জানুয়ারি থেকে সুনীল অরোরা মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের বিশেষ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
মোদীর এই কৌশল বাস্তবায়িত করা সহজ নয়। কারণ বসুন্ধরা যেমন ইস্তফা দিতে নারাজ, তেমনই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান বিধানসভা ভোট পিছোতে রাজি নন। তাঁর ধারণা, যত দেরি হবে, তত লাভ হবে কংগ্রেসের। তা ছাড়া রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলে ভোটের সময় প্রশাসনের ক্ষমতা তাঁর হাতে থাকবে না বলে এই পরিকল্পনায় মত নেই শিবরাজের। শুক্রবারই ভোপালে দলের দফতরে পুজো দিয়ে রাজ্যজুড়ে ‘জন আর্শীর্বাদ যাত্রা’ শুরু করেছেন তিনি। এই যাত্রার মাধ্যমে মধ্যপ্রদেশে ভোট না পিছনোর জন্য দলীয় নেতৃত্বকে বার্তা দিতে চান শিবরাজ।
রাজস্থানের ‘অপারেশন’ নির্ভর করছে বসুন্ধরা কতটা নমনীয় হবেন, তার ওপর। সম্প্রতি রাজস্থানে দলের সভাপতি নিয়োগে অমিত শাহ নিজের পছন্দসই ব্যক্তিকে বসাতে পারেননি বসুন্ধরার আপত্তিতে। এখন সেই যুক্তি দিয়েই বসুন্ধরাকে বলা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে। বিজেপি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী ওম মাথুরকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চান। অতীতে বসুন্ধরা কেন্দ্রে মন্ত্রী ছিলেন। নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই তিনি বাজপেয়ী-আডবাণীর নির্দেশে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
বসুন্ধরা অবশ্য প্রকাশ্যে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বা দল আমাকে এমন কথা কখনও বলেননি।’’ তবে জয়পুর শহরে বহু জায়গায় পোস্টার পড়েছে, বসুন্ধরা হটাও/মোদী লাও!