ছবি: পিটিআই।
পরপর দু’টি লোকসভায় জিতে কেন্দ্রে সরকার গঠন। দেশের অন্তত ডজনখানেক রাজ্যে চলছে বিজেপির সরকার। তা সত্ত্বেও কখনও নাগরিকত্ব আইন, কখনও সংস্কারমুখী কৃষি আইন বা শ্রম আইন ঘিরে ‘মিথ্যা প্রচারে’ নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে সরকারকে। নিরন্তর এই ‘মিথ্যা প্রচারের’ পিছনে বড় মাপের রাজনৈতিক চক্রান্ত থাকতে পারে বলে আজ অভিযোগ তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠা দিবসে জনসচেতনতা বাড়াতে দলের সব কর্মীকে এগিয়ে আসার ডাক দিলেন তিনি। যদিও আইটি সেল এবং অপরাপর মাধ্যমে লাগাতার ভুয়ো খবর এবং বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ বিরোধীরা সবচেয়ে বেশি করে তোলেন ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধেই।
আজ নিজের বক্তব্যে কেন্দ্র তথা একের পর এক রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতা দখল নিয়ে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপিকে অনেকেই ভোট জয়ের মেশিন হিসেবে বর্ণনা করে থাকে। অথচ এরা ভুলে যায় দেশের মানুষের মন জয় করার নিরন্তর প্রচেষ্টাই জয়ের অন্যতম কারণ। আসলে বিরোধীদের ওই ব্যাখ্যার মধ্যে দ্বিচারিতা রয়েছে। যদি আমরা জিতি, তা হলে বলা হয় বিজেপি ভোট জয়ের মেশিন। কিন্তু যদি অন্য দল জেতে, সে ক্ষেত্রে তাদের নেতাদের প্রশংসা করা হয়। যারা বলে বিজেপি কেবল ভোট জয়ের মেশিন, তাঁরা যেমন সংবিধানকে মানেন না, তেমনি ভোটারদের বুদ্ধি-বিবেচনাকেও বুঝতে ভুল করেন। তারা কখনওই ভারতীয় ভোটারদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নকে ধরতে পারেন না।’’
নাগরিকত্ব আইন দেড় বছর আগে পাশ করেও রূপায়ণ করতে পারেনি মোদী সরকার। নতুন শ্রম আইন ঘিরেও দেখা দিয়েছে বিতর্ক। আর সংস্কারমুখী কৃষি আইনের বিরুদ্ধে চার মাসের বেশি সময় ধরে দিল্লি ঘেরাও করে রেখেছেন কৃষকেরা। ফলে সার্বিক ভাবে সরকারের নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে গোটা দেশ জুড়েই। সংশয় তৈরি হয়েছে দলের মধ্যেও। তাই আজ সকালে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনস্বার্থেই সব নীতি এনেছে বিজেপি সরকার। কিন্তু বিরোধী কিছু দল পরাজয় স্বীকার করতে না পেরে কেন্দ্রের সরকারের নীতি-সিদ্ধান্ত বা আইনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। মোদীর কথায়, ‘‘এরা কখনও মানুষকে বোঝাচ্ছে সংবিধান পাল্টে দেওয়া হবে, কখনও বলছে সংরক্ষণ প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। কখনও বলছে, সরকার কৃষকদের জমি কেড়ে নেবে। আসলে সংকীর্ণ স্বার্থের জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। প্রতিটি সমর্থককে বুঝতে হবে, এর পিছনে বড় মাপের ষড়যন্ত্র রয়েছে, যাদের লক্ষ্যই হল দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা।’’ এর আগে কৃষক আন্দোলন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে শোরগোল তৈরি হওয়াতেও চক্রান্তের তত্ত্ব খাড়া করেছিল কেন্দ্র।