জেরা নলিনীকে, অস্বস্তিতে চিদম্বরম পরিবার

সারদা কাণ্ডে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের স্ত্রী নলিনী চিদম্বরমকে এ বার জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। নলিনী পেশায় আইনজীবী। তাঁর চেন্নাইয়ের বাড়িতে গিয়ে তদন্তকারীরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর। গ্রেফতারের আগে সিবিআইকে একটি ১৮ পাতার চিঠি লিখেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:০৮
Share:

নলিনী চিদম্বরম।

সারদা কাণ্ডে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের স্ত্রী নলিনী চিদম্বরমকে এ বার জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। নলিনী পেশায় আইনজীবী। তাঁর চেন্নাইয়ের বাড়িতে গিয়ে তদন্তকারীরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর।

Advertisement

গ্রেফতারের আগে সিবিআইকে একটি ১৮ পাতার চিঠি লিখেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। ওই চিঠিতে সুদীপ্ত দাবি করেছিলেন, উত্তর-পূর্বের একটি টিভি চ্যানেল কেনা নিয়ে তাঁর সঙ্গে অসমের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাতঙ্গ সিংহ এবং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী মনোরঞ্জনা সিংহের ৪২ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল। পরে সিবিআই-এর কাছে সুদীপ্ত অভিযোগ করেন, ওই চুক্তিটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে মাতঙ্গ ও মনোরঞ্জনা বিশেষ সুবিধে পান। ওই চ্যানেল কেনার সময়ে মনোরঞ্জনার আইনি পরামর্শদাতা ছিলেন নলিনী। সুদীপ্ত সিবিআইকে জানিয়েছেন, চুক্তিতে এটাও

বলা হয়েছিল, চ্যানেল কিনতে মনোরঞ্জনা যাঁর কাছ থেকে আইনি সাহায্য নেবেন তাঁর পারিশ্রমিক দেবেন সুদীপ্তই। তাই চুক্তি অনুযায়ী সুদীপ্ত মোট এক কোটি টাকা দেন নলিনীকে।

Advertisement

মনোরঞ্জনাকে এর আগে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ও সিবিআই। গুয়াহাটিতে মাতঙ্গ ও মনোরঞ্জনার বাড়িতেও সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। মনোরঞ্জনাকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরেই এ দিন নলিনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।

তবে নলিনী পরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, “সিবিআই আমাকে জেরা করেনি। তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন, মনোরঞ্জনা সিংহ আমার কাছ থেকে পেশাদারি পরামর্শ চেয়েছিলেন কি না। আমি বলেছি যে, তিনি পরামর্শ নিয়েছিলেন।”

নলিনীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে বলা হচ্ছে, মনোরঞ্জনার হয়ে একাধিক বার কোম্পানি ল’বোর্ডে লড়েছেন নলিনী। প্রায় এক বছর তিনি মনোরঞ্জনার আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। সেই সম্পর্কের খাতিরেই মনোরঞ্জনা ওই চুক্তির সময়ে নলিনীর থেকে আইনি পরামর্শ নিয়েছিলেন। তবে সূত্রটির দাবি, সারদার অডিট রিপোর্ট এবং বিভিন্ন আইনি দিক খতিয়ে দেখে সুদীপ্তের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতে মনোরঞ্জনাকে নিষেধ করেছিলেন নলিনী।

কিন্তু নলিনী কি এক কোটি টাকা নিয়েছিলেন?

নলিনী-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, তিনি যে মাপের আইনজীবী, তাতে এক বছর ধরে আইনি লড়াই, চুক্তির খসড়া তৈরি ইত্যাদির জন্য এক কোটি টাকা পারিশ্রমিক অস্বাভাবিক কিছু নয়। এখানে কোনও বেআইনি লেনদেন হয়নি। সব টাকাই চেকে নেওয়া হয়েছে, তার আয়করও দেওয়া

হয়েছে। সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, নলিনীর সঙ্গে যে হেতু সুদীপ্ত সেনের ব্যবসায়িক লেনদেন হয়েছিল, তাই আরও কিছু তথ্য পাওয়া যায় কি না, খতিয়ে দেখতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সিবিআইকে লেখা সুদীপ্তেরচিঠি প্রকাশিত হওয়ার পরে পি চিদম্বরম বলেছিলেন, “যা বলার বলবেন নলিনী। কারণ, তিনি নিজে আইনজীবী। তাঁর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই।” কিন্তু সারদা কাণ্ডে চিদম্বরমের মতো শীর্ষ নেতার স্ত্রীর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় কংগ্রেস যে সত্যিই কিছুটা যে বেকায়দায়, তা মেনে নিচ্ছেন অনেকেই। উপরন্তু বিতর্কিত এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তিতে পি চিদম্বরম ও তাঁর ছেলে কার্তির ভূমিকাও এখন খতিয়ে দেখছে সিবিআই। ফলে সিবিআই-স্পর্শে অস্বস্তিটা এখন শুধু দলে নয়, গোটা চিদম্বরম পরিবারেই!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement