দীর্ঘ তিন বছর ধরে তাঁকে তলব করে বারবার নোটিস পাঠাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বারে বারেই হাইকোর্ট দেখিয়ে ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সামনে হাজিরা এড়িয়ে যাচ্ছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের স্ত্রী এবং আইনজীবী নলিনী চিদম্বরম।
বৃহস্পতিবারেও ইডি-র মুখোমুখি হওয়ার ঝক্কি একই ভাবে এড়ালেন নলিনী। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের নতুন নোটিস পেয়ে চিদম্বরম-পত্নীও নতুন করে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এবং তদন্তকারীদের কাছে সেই আবেদনের উল্লেখ করে সময় চেয়ে এ দিন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হননি তিনি।
২০১৬ সালে প্রথম বার নলিনীর বিরুদ্ধে নোটিস জারি করে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। চিদম্বরম-ঘরনি তখন সোজা মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এবং জানান, তিনি ইডি-র কলকাতা অফিসে আসতে চান না। পরে আদালত নলিনীর ওই আবেদন খারিজ করে দেয়। তার পরেও নলিনীকে বেশ কয়েক বার তলব করেছে ইডি। কিন্তু কোনও বারেই তিনি হাজিরা দেননি।
তলবি নোটিস পেয়ে নলিনী ফের মাদ্রাজ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছেন বলে ইডি সূত্রের খবর। ওই বিষয়ে বিচারপতিরা এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ দেননি। ইডি-র এক কর্তার কথায়, ‘‘যে-হেতু তিনি আদালতে নতুন করে আবেদন করেছেন, তাই আমাদের কাছে নলিনী আরও সময় চেয়েছেন। আমরা সময় দিয়েছি।’’ ইডি-র ওই কর্তার দাবি, সারদা গোষ্ঠীর টাকা নয়ছয়ের তদন্ত চলছে। সে-ক্ষেত্রে নলিনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইডি সূত্রের খবর, ২০১০ সালের জুনে বৈদ্যুতিন চ্যানেলে খবর সম্প্রচার করার জন্য সারদা-প্রধান সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে এক সংবাদ সংস্থার কর্ণধার মনোরঞ্জনা সিংহের চুক্তি হয়েছিল। অভিযোগ, নিজের চ্যানেল মারফত খবর সম্প্রচারের জন্য সারদার কাছ থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা নিয়েছিলেন মনোরঞ্জনা। তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তিনি এখন জামিনে মুক্ত। ওই চুক্তিপত্রের আইনি বিষয়টি দেখাশোনা করছিলেন নলিনী। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চুক্তিপত্র তৈরির জন্য প্রায় এক কোটি টাকা নিয়েছিলেন চিদম্বরমের স্ত্রী।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফে পরে আদালতে জানানো হয়, শুধু ওই চুক্তিপত্রের তত্ত্বাবধানই নয়, মনোরঞ্জনার সংবাদ সংস্থার আইনি বিষয়ক সংক্রান্ত সব কিছুরই দেখাশোনা করতেন নলিনী। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, মনোরঞ্জনা ও নলিনীর কয়েকটি ই-মেল বার্তায় ওই সংবাদ সংস্থায় টাকা নয়ছয়ের প্রচুর প্রমাণ রয়েছে।