বিজেপির জো হুজুর— এই অভিযোগ তুলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল যে উপরাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে সরব ছিলেন, তাঁকেই হঠাৎ সরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত কাল মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবালকে ডেকে পাঠিয়ে উপরাজ্যপাল নজীব জঙ্গ বলেছিলেন, তিনি ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বড়দিনের ছুটি নিচ্ছেন। তার পর কাজে ফিরবেন। কাল রাতে মুখ্যমন্ত্রীকে এ কথা জানানোর পর আজ বিকালে নজীবের ইস্তফা রাজধানীতে আলোড়ন ফেলেছে। উপরাজ্যপাল পদে তাঁর এখনও ১৮ মাস মেয়াদ ছিল। বেশ কিছু বিল নিয়ে কেজরীবাল বনাম নজীব জঙ্গের লড়াই আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। কিন্তু ইদানিং সেই সংঘাত অনেকটাই কমে গিয়েছিল। দু’পক্ষের মধ্যে একটা বোঝাপড়া তৈরি হচ্ছিল। কেজরীবাল শিবির মনে করছে, প্রশাসনিক বেশ কিছু বিষয়ে নজীব সংঘাত এড়িয়ে যাচ্ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর যা পছন্দ হচ্ছিল না। সেই জন্যই তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। কেজরীবালের আশঙ্কা, এর পর আরও কট্টর কোনও মোদী অনুগতকে উপরাজ্যপাল করা হবে, পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগে যিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে চাপে রাখবেন। কিছু দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া রাজ্যের মুখ্যসচিব বদলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির নজীব জঙ্গ দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। এক সময়ে সনিয়া গাঁধীর ঘনিষ্ঠ হলেও পরে তিনি অরুণ জেটলি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুগত হয়ে ওঠেন। কিন্তু প্রশাসনিক কাজ চালাতে গিয়ে সম্প্রতি দিল্লি বিজেপির মোদী-ঘনিষ্ঠ কিছু নেতার সঙ্গে তাঁর বিরোধ তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের সঙ্গেও সংঘাত চরমে ওঠে। জল্পনা— এই কারণেই বিদায় নিতে বলা হল নজীবকে। উপরাজ্যপাল অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন। রাজভবন সূত্রে বলা হয়েছে, এ’টি তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। নজীব আবার শিক্ষা জগতেই ফিরতে চান।