ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল (আইএনএলডি)-এর হরিয়ানার সভাপতি নফে সিংহ রাঠী। — ফাইল চিত্র।
দিন কয়েক আগেই হরিয়ানার বিরোধী দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল (আইএনএলডি)-এর নেতা নফে সিংহ রাঠীর খুনের ঘটনায় দায় স্বীকার করেছিলেন গ্যাংস্টার কপিল সাংওয়ান ওরফে নন্দু। এ বার সেই খুনের ঘটনায় দু’জন শুটারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ধৃত দু’জনই কপিলের দলের সদস্য।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হরিয়ানা এবং দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল যৌথ অভিযান চালিয়ে রবিবার দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। গোয়া থেকে সৌরভ এবং আশিস নামে যে দু’জনকে ধরা হয়েছে। তাঁরা খুবই দক্ষ শুটার। তাঁদের গতিবিধির উপর কয়েক দিন ধরে নজর রাখছিলেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সেই সূত্র ধরেই অভিযান চালিয়ে এই গ্রেফতারি। ঝাজ্জরের পুলিশ সুপার অর্পিত জৈন জানান, হামলাকারীরা হামলার সময় যে গাড়িটি ব্যবহার করেছিলেন তার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সূ্ত্রে আরও খবর, নফে খুনে চার জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গিয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় নিজের গাড়ির মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন আইএনএলডি নেতা নফে। শুধু তিনি একা নন, দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারান তাঁর সঙ্গে থাকা আরও এক দলীয় কর্মী। আহত হন নফের তিন জন নিরাপত্তারক্ষী। হরিয়ানার ঝাজ্জর জেলার একটি রেল ক্রসিংয়ের সামনে যখন নফের গাড়ি দাঁড়ায়, তখন আচমকাই তার পাশে একটি এসইউভি এসে থামে। তার পর সেই গাড়ি থেকেই অতর্কিতে হামলা চালানো হয় নফের উপর।
দিল্লি এবং হরিয়ানা পুলিশ যৌথ ভাবে এই খুনের ঘটনার তদন্ত করছে। তবে বিরোধীরা এখনও নফে খুনে সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড়। তদন্তে জানা যায়, আইএনএলডি নেতা খুনের ঘটনায় কোনও গ্যাংস্টারের যোগ রয়েছে। তাঁর খোঁজে তিহাড় জেলে বন্দি একাধিক গ্যাংস্টারকে জেরা করে পুলিশ।
গত বুধবার সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে নফেকে খুন করার দায় স্বীকার করেন কপিল। কেন তিনি খুন করলেন, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন। কপিলের চিরশত্রু মনজিৎ মহলের সঙ্গে সখ্যের কারণেই খুন হতে হল নফেকে, এমনই জানিয়েছিলেন তিনি। হরিয়ানা পুলিশ সেই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেছে। পোস্টে একটি ছবিও দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মনজিৎ এবং নফে করমর্দন করছেন। তার পর থেকেই শুটারদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় হানা দেয় পুলিশ। অবশেষে দু’জনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে তারা। দু’জনেই কপিলের দলের লোক বলে দাবি পুলিশের।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে অপরাধ জগতে পা দেন কপিল। খুন, অপহরণ, তোলাবাজি— একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। ২০১৬ সালে রাজস্থানে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০২০ সালে প্যারোলে জেলের বাইরে আসেন। তার পরই দেশ ছেড়ে পালান কপিল। ‘জাল’ পাসপোর্ট বানিয়ে তাইল্যান্ড হয়ে প্রথমে দুবাই যান। বর্তমানে ব্রিটেনে রয়েছেন তিনি।