দুর্ঘটনায় মৃত্যু মায়ানমারের কনসাল জেনারেলের

আজ সকাল দশটা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের গিরিডি জেলার নিমিয়াঘাট থানা এলাকায়, জি টি রোড ধরে কলকাতার দিকে আসছিল কনসাল-জেনারেলের গাড়িটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রাঁচী শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৭
Share:

কনসাল জেনারেলের দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: চন্দন পাল।

বুদ্ধগয়ায় দর্শন সেরে গাড়িতে কলকাতা ফেরার পথে গিরিডির কাছে, জি টি রোডে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল কলকাতায় নিযুক্ত মায়ানমারের কনসাল-জেনারেল পোই সোইয়ের। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৯। দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম তাঁর স্ত্রী নিও আও। তাঁকে রাঁচির বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি তাঁর পিএ এবং গাড়ির চালকও।

Advertisement

আজ সকাল দশটা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের গিরিডি জেলার নিমিয়াঘাট থানা এলাকায়, জি টি রোড ধরে কলকাতার দিকে আসছিল কনসাল-জেনারেলের গাড়িটি। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, দ্রুত গতিতেই আসছিল গাড়িটি। তার সামনে একটি মোটরবাইক আরও দ্রুত গতিতে আসছিল। আচমকাই বাইকটি ব্রেক কষে। গাড়ির চালক দুর্ঘটনা এড়াতে গিয়ে পাশের ‘আপ লেন’-এ চলে আসেন। কলকাতার দিক থেকে আসা একটি দ্রুত গতির মালবোঝাই ট্রাক গাড়িটির বাঁদিকে সজোরে ধাক্কা মারে। পিছনের আসনের বাঁদিকেই বসেছিলেন কনসাল-জেনারেল। তাঁর পাশে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। সামনে চালক বিপিন সিংহের পাশে বসেছিলেন পিএ, তিন তুয়াং। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ কর্মীরা এসে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে চার জনকে উদ্ধার করে।

আরও পড়ুন: ৭ কোম্পানি বাহিনী সরছে, থাকছে বাকি ৮

Advertisement

গিরিডির এসপি অখিলেশ সিংহ ভেরিয়ার বলেন, ‘‘কনসাল-জেনারেলকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বাকিদের সঙ্গে সঙ্গেই রাঁচীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠানো হয়েছে।’’ বিদেশি কূটনীতিকের গাড়িটির জন্য কোনও পাইলট ব্যবস্থা কেন ছিল না, তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। এসপি-র বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাছে ওঁর যাওয়া-আসার ব্যাপারে আগাম কোনও খবরই ছিল না। খবর থাকলে আমরা নিশ্চয়ই পাইলট কার ও পর্যাপ্ত পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করতাম।’’ রাঁচীতে রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, কনসাল-জেনারেল যে ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে যাওয়া আসা করবেন তার কোনও খবর রাজ্যের কাছেও ছিল না।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক সূত্রের বক্তব্য, সাধারণ ভাবে বিদেশি কূটনীতিকরা কোনও রাজ্যে গেলে বা কোনও রাজ্যের উপর দিয়ে যাতায়াত করলে তা আগাম সংশ্লিষ্ট সরকারকে জানাতে হয়। এ ক্ষেত্রে কলকাতার কনসাল-জেনারেলের অফিস থেকেই এই খবর পাঠানোর কথা। এই খবরের ভিত্তিতেই কূটনীতিকদের নিরাপত্তা, পাইলটের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সেই সেই রাজ্যে প্রশাসনের। মন্ত্রকের সূত্রটি জানান, তাঁরা দুর্ঘটনার বিষয়ে ঝাড়খণ্ড সরকারের কাছ থেকে বিশদ রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। নিরাপত্তার গাফিলতি কেন, তাও দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে বিহার সরকার ও ঝাড়খণ্ড সরকারের বক্তব্য জানতে চাওয়া হবে।

কনসাল-জেনারেলের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। তিনি বলেন, ‘‘ দুঃখজনক ঘটনা। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।’’ পাশাপাশি, নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রভীশ কুমার এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে জানান, তাঁরা মায়ানমার দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। ভারত সরকার প্রয়োজনীয় সব রকম সাহায্যের ব্যবস্থা করছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement