সংস্কৃত পড়ান রমজান আলি, শামিম বেদান্ত দর্শন, বারাণসী শিক্ষা নেবে কি বেলুড়ের কাছে?

বাঙালি কবির এই মহাপ্রত্যয়ে আস্থাশীল বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের কর্তৃপক্ষ। এই বিশ্বাস নিয়েই চলে তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই শিক্ষক কোন ধর্মের বা কোন বর্ণের, সেটা কখনওই সেখানে বিবেচ্য নয় বলেই জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫১
Share:

বেলুড় মঠ। —ফাইল চিত্র

সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।

Advertisement

বাঙালি কবির এই মহাপ্রত্যয়ে আস্থাশীল বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের কর্তৃপক্ষ। এই বিশ্বাস নিয়েই চলে তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই শিক্ষক কোন ধর্মের বা কোন বর্ণের, সেটা কখনওই সেখানে বিবেচ্য নয় বলেই জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।

তাই মুসলিম শিক্ষকের কাছে সংস্কৃত পড়বেন না বলে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা যখন বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন, সেই সময়েই বেলুড়ের ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রমজান আলির কাছে সংস্কৃতের পাঠ নিচ্ছেন পড়ুয়ারা। কয়েক দিন আগে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরে সংস্কৃত বিভাগে সহকারী শিক্ষকের পদে যোগ দিয়েছেন রমজান। তাঁরই সঙ্গে যোগ দিয়েছেন গণেশ টুডু নামের আরও এক শিক্ষক। কলেজ সার্ভিস কমিশন (সিএসসি) থেকেই তাঁদের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল।

Advertisement

বেলুড়ের ওই কলেজ সূত্রের খবর, দর্শন, রসায়ন, পরিসংখ্যান-সহ আরও কয়েকটি বিভাগ মিলিয়ে ৭-৮ জন মুসলিম শিক্ষক আগে থেকেই সেখানে পড়াচ্ছেন। তাই রমজানের যোগ দেওয়াটা নতুন কিছু নয় বলেই মনে করেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ স্বামী শাস্ত্রজ্ঞানন্দ। তিনি বলেন, ‘‘স্বামী বিবেকানন্দ বলতেন, ‘প্রত্যেক মানুষের ভিতরেই সেই অনন্ত দেবত্ব রয়েছে। তাকে বিকশিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’ তাই কোন শিক্ষক কোন ধর্মের বা কোন বর্ণের, সেটা তো দেখার কথাই নয়।’’ ওই কলেজেই দীর্ঘদিন ধরে বেদান্ত পড়াচ্ছেন দর্শন বিভাগের প্রধান শামিম আহমেদ। তাঁর কথায়, ‘‘বিদ্যামন্দিরের ছাত্রদের কাছে উনি (রমজান) এক জন মাস্টারমশাই। তিনি কেমন পড়াচ্ছেন, শুধু সেটাই দেখছেন পড়ুয়ারা। এবং এটাই রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বৈশিষ্ট্য।’’

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ, শ্রীশ্রী মা সারদা এবং স্বামী বিবেকানন্দের মনুষ্যত্বের আদর্শই মিশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আদর্শ বলে জানাচ্ছেন সন্ন্যাসীরাও। বেলুড়ের ওই কলেজের সম্পাদক স্বামী দিব্যানন্দের কথায়, ‘‘অন্য ধর্ম বা বর্ণের শিক্ষক এখানে যোগ দিলে তাঁদের সঙ্গে এমন ভাবে আচরণ করা হয়, যাতে তাঁরাও ভুলে যান, কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কলেজে পড়াচ্ছেন। শ্রীরামকৃষ্ণদেবই তো বলেছেন, যত মত তত পথ।’’ শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, এই বাংলা শিক্ষককে শিক্ষক হিসেবেই দেখে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement