মুস্কান রস্তোগী। —ফাইল চিত্র।
পরিবার যে তাঁর পাশে নেই, তা অনেক আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। স্বামীকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই মুস্কান রস্তোগীর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছেন তাঁর বাবা-মা! এমন পরিস্থিতিতে আদালতে আইনি লড়াই লড়তে সরকারি আইনজীবী চাইলেন মেরঠের মুস্কান!
প্রেমিক সাহিল শুল্কার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে স্বামী সৌরভ ভরদ্বাজকে খুন করেন মুস্কান! এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শোরগোল পড়েছে গোটা দেশে। সেই অভিযুক্ত দু’জনই বর্তমানে মেরঠের জেলে বন্দি। জেল সুপার বীরেশ রাজ শর্মা সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন, মুস্কান এবং সাহিলকে আলাদা ব্যারাকে রাখা হয়েছে। কাউকেই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘শনিবার মুস্কান আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। আমি তাঁর ব্যারাকে ফোন করে যোগাযোগ করি। তখন তিনি আমাকে জানান, তাঁর পরিবার বিরক্ত। তাঁর হয়ে মামলা লড়বে না। তাই তাঁকে যেন সরকারের তরফে কোনও আইনজীবীর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, সেই অনুরোধ করেন মুস্কান। আমরা আদালতে সেই মর্মে একটি আবেদন পাঠাচ্ছি। কারণ, প্রত্যেক অভিযুক্তেরই আইনি সহায়তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’’
গত ৪ মার্চ খুন হন মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ। অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী মুস্কান এবং প্রেমিক সাহিল ছুরি দিয়ে কুপিয়ে প্রথমে তাঁকে খুন করেন। তার পর তাঁর দেহ ১৫টি টুকরো করে কাটেন। দেহের টুকরোগুলি একটি ড্রামে ভরে তার উপর সিমেন্ট চাপা দিয়ে দেন তাঁরা। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই অপরাধ ধরা পড়ে। খুনের তদন্তে নেমে একের পর এক রহস্যের পর্দা উন্মোচন করছেন তদন্তকারীরা।
খুনের অভিযোগে ধৃত মুস্কান এবং সাহিলের মধ্যে মাদকাসক্তি ধরা পড়েছে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, জেলে আসার কিছু সময় পর থেকেই তাঁরা অস্থির হয়ে পড়েন। প্রথম রাতেই মুস্কানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। জেলের চিকিৎসকেরা তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে জানান, মুস্কান মাদকে আসক্ত। তার পরেই সাহিলের চিৎকার শোনা যায়। মাদক চেয়ে জেলের ভিতর ছটফট করতে থাকেন তিনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা দু’জনেই নিয়মিত মাদকের ইঞ্জেকশন নিতেন। শুধু তা-ই নয়, জেলে খাবারের প্রতিও তাঁদের অনীহা দেখা গিয়েছে। বার বার মাদক দাবি করছেন। এই প্রসঙ্গে জেল সুপার জানান, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। নেশামুক্তি কেন্দ্রের মাধ্যমে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুই ধৃতেরই কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। বীরেশের কথায়, ‘‘দুই বন্দির থেকে অন্য বন্দিদের দূরে রাখা হচ্ছে।’’