তাওয়াংয়ে মেজর বব স্মৃতি সংগ্রহশালার উদ্বোধন। ছবি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সৌজন্যে।
৭০ বছর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি তাওয়াংয়ের উপরে নিজেদের দখল প্রতিষ্ঠা করেছিল ভারত। তাওয়াংয়ের মাটিতে প্রথম ভারতীয় তেরঙা উড়িয়েছিলেন টাংখুল নাগা অফিসার মেজর বব রেলেংনাও খাথিং। যে কাজ দীর্ঘ চেষ্টাতেও করতে পারেনি ব্রিটিশেরা। বিস্মৃত সেই সেনাকর্তা তথা আমলার অবদানকে সম্মান দিতে আজ, তাওয়াংয়ে তেরঙা ওড়ানোর সত্তর বছর পূর্তির দিনে, তাওয়াংয়ে ‘মেজর বব স্মৃতি সংগ্রহশালা’র শিলান্যাস করলেন দেশের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়ত। উন্মোচন করা হল মেজর ববের আবক্ষ মূর্তি। হাজির ছিলেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা, কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজু, অরুণাচলের রাজ্যপাল অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার বিডি মিশ্র ও ববের পুত্র, অবসরপ্রাপ্ত আইআরএস অফিসার জন খাথিং। তাওয়াংয়ের উপরে ভারতের ঐতিহাসিক অধিকার প্রতিষ্ঠার স্মারক হিসেবে এই সৌধকে চিনের সামনে তুলে ধরছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। মেজর বব খাথিং ১৯৫১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসাম রাইফেলসের ২০০ জওয়ান ও ৬০০ জন পোর্টারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি রওনা হয়েছিলেন চিন সীমান্তের উদ্দেশে। লক্ষ্য ছিল ম্যাকমোহন লাইনে ভারতের সীমানা ও শেষ জনবসতি চিহ্নিত করা। অচেনা পাহাড়-জঙ্গল পার করে, বিভিন্ন পাহাড়ি জনপদে গ্রামপ্রধানদের সঙ্গে দেখা করার পরে ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁরা তাওয়াং পৌঁছান।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত তাওয়াং স্বাধীন তিব্বত সরকারের অংশ ছিল। অনেক চেষ্টা করেও ব্রিটিশরা তাওয়াংকে ভারতের অংশ করতে পারেনি। বব তাওয়াং বৌদ্ধ মঠে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, লামা, গ্রামপ্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন। নিজের বাকপটুতা ও কূটনৈতিক কৌশলে তিনি স্থানীয় মন পা জনজাতির মন জয় করেন। তিব্বত সরকারের অত্যধিক করের চাপে জর্জরিত মন পা-দের ভারতের গণতন্ত্র বিষয়ে বোঝান, আশ্বাস দেন ভারত কখনও তাঁদের উপরে অযৌক্তিক কর চাপাবে না। সকলকে রাজি করিয়ে ববই প্রথম তাওয়াং থেকে বুম লা সীমান্ত পর্যন্ত ভারতের প্রশাসনিক অধিকার কায়েম করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি তাওয়াংয়ে প্রথমবার ওড়ানো হয় স্বাধীন ভারতের পতাকা।