নলিনী শ্রীহরণ
ভেলোর জেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করল রাজীব গাঁধীর হত্যাকারী নলিনী শ্রীহরণ। তার আইনজীবী জানিয়েছেন, গত কাল রাতে জেলে বচসার জেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নলিনী। তামিলনাড়ুর জেল বিভাগের কর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, আত্মহত্যার চেষ্টা করেনি নলিনী। তবে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছে।
১৯৯১ সালে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরমবুদুরে বোমা বিস্ফোরণে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর হত্যার ঘটনার পরে ওই মামলার অন্যতম আসামি নলিনীর ফাঁসির সাজা হয়। পরে সনিয়া গাঁধীর হস্তক্ষেপে ফাঁসির সাজা রদ হয়, নলিনীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। গত ২৯ বছর ধরে ভেলোর জেলের মহিলা সেলেই বন্দি রয়েছে ৫৫ বছর বয়সি নলিনী। আজ তার আইনজীবী কে পুগালেন্থি একটি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, জেল কর্তাদের সঙ্গে বচসার জেরেই গত কাল রাতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে নলিনী। জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নলিনীকে অত্যাচার করার অভিযোগ এনে পুগালেন্থি তাকে অন্য জেলে স্থানান্তরিত করার জন্য রাজ্যের কাছে আর্জি জানান। পুগালেন্থি বলেন, ‘‘নলিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল আর এক আসামি। তার পরেই গত কাল রাত সাড়ে আটটা নাগাদ নলিনীর সেল-এ যান জেলর। ওই অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেই সময়ে জেলরের সঙ্গে নলিনীর বচসা বাধে। পরে অবসাদে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নলিনী।’’ আইনজীবী জানান, ভেলোর জেলে বন্দি রাজীবের অন্য হত্যাকারী, নলিনীর স্বামী মুরুগানও চাইছে, তার স্ত্রী-কে অন্যত্র স্থানান্তর করা হোক।
তামিলনাড়ুর জেল বিভাগের কর্তা সুনীল কুমার সিংহ অবশ্য জানান, অন্য এক আসামিকে হেনস্থা করার অভিযোগ আসার পরে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছে নলিনী। ওই জেলকর্তার কথায়, ‘‘এটা হুমকি, ব্ল্যাকমেলও বলা চলে। তবে নলিনী আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেনি।’’ সিংহ আরও জানান, নলিনীর বিরুদ্ধে হেনস্থা করার অভিযোগ করেছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি। অন্য জেলে যাওয়ার চেষ্টা করছে সে। ওই মহিলা আসামিকে স্থানান্তর করা হলে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছে রাজীব গাঁধীর হত্যাকারী।
পুগালেন্থি অবশ্য জেলকর্তাদের দাবি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘এ সব বিশ্বাস করা যায় না। কারণ, প্রায় তিন দশক ধরে জেলে বন্দি রয়েছে নলিনী। কখনও আত্মহত্যার চেষ্টা করেনি। আমার মনে হয়, জেলকর্তারা নলিনীকে অত্যাচার করেছেন।’’ নলিনীর জীবনের ঝুঁকি রয়েছে বলে দাবি করে তার আইনজীবীর জানান, মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামী ও জেল কর্তৃপক্ষের কাছে নলিনী আর্জি জানিয়েছে, তাকে চেন্নাইয়ের কোনও জেলে স্থানান্তর করা হোক।
গত বছরেই মেয়ের বিয়ের জন্য প্যারোলে এক মাসের জন্য জেলের বাইরে এসেছিল নলিনী। তার মেয়ে ব্রিটেনে পড়াশোনা করেন। সম্প্রতি নলিনী আদালতে আর্জি জানায়, ব্রিটেন ও শ্রীলঙ্কায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাকে হোয়াটসঅ্যাপ কল করার অনুমতি দেওয়া হোক। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ আদালতে জানায়, কোনও আসামিকে বিদেশে ফোন করার অনুমতি দেওয়া হয় না। শুধু মাত্র কেন্দ্রই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।