(বাঁ দিক থেকে) বিজয় মাল্য, নীরব মোদী, মেহুল চোক্সি। —ফাইল চিত্র ।
তদন্তকারী সংস্থাগুলি সময়মতো গ্রেফতার করতে না পারার কারণেই দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন নীরব মোদী, বিজয় মাল্য এবং মেহুল চোক্সির মতো ব্যবসায়ীরা। আর্থিক তছরুপ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলাকালীন তেমনটাই মন্তব্য করল মুম্বইয়ের একটি আদালত।
২০২২ সালের আর্থিক তছরুপ মামলায় অভিযুক্ত হন ব্যোমেশ শাহ নামে মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত। তবে অনুমতি ছাড়া তাঁর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত। সেই নিয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত। সংবাদমাধ্যম ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানি ছিল মুম্বইয়ের ওই আদালতের বিচারক এম জি দেশপাণ্ডের এজলাসে। মামলার শুনানি চলাকালীন ব্যোমেশ বিদেশ ভ্রমণের জন্য তাঁর জামিনের শর্ত শিথিল করার আবেদন জানান। তাঁর যুক্তি ছিল, ব্যবসার কাজে তাঁকে ঘন ঘন বিদেশে ভ্রমণ করতে হয়। তবে, সেই আবেদনের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। ইডি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, ব্যোমেশকে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দিলে তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। ফলে পলাতক ব্যবসায়ীদের তালিকায় নাম জুড়তে পারে তাঁর। এই কথা বলার সময় পলাতক ব্যবসায়ী নীরব মোদী, বিজয় মাল্য এবং মেহুল চোক্সির উদাহরণও দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এর পরেই বিচারক দেশপাণ্ডে মন্তব্য করেন, তদন্তকারী সংস্থাগুলি সময়মতো পদক্ষেপ না করার জন্যই ওই ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যেতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি দু’পক্ষের যুক্তি এবং সওয়াল-জবাব খতিয়ে দেখেছি। এটা উল্লেখ করা দরকার যে, এই সমস্ত ব্যবসায়ীরা পালাতে পেরেছেন, কারণ সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থা তাঁদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়েছে।’’
বিচারক দেশপাণ্ডে আরও বলেন, “মূলত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি কোনও আশঙ্কা ছাড়া এই ধরনের ব্যবসায়ীদের বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়। তবে প্রথম বারের মতো এই নিয়ে আদালতের সামনে ইডি আপত্তি জানাচ্ছে। ইডি মূলত যা করতে ব্যর্থ হয়েছে, তা আদালত করতে পারে না।” এর পরেই ব্যোমেশের আবেদন বিবেচনা করে তাঁকে অনুমতি দেন বিচারক।
উল্লেখ্য, পলাতক ব্যবসায়ী নীরব এবং বিজয় বর্তমানে ব্রিটেনে রয়েছেন। তাঁরা দু’জনেই আর্থিক জালিয়াতিতে অভিযুক্ত পলাতক শিল্পপতি। অন্য দিকে, চোকসি ডোমিনিকাতে রয়েছেন।